পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VLL O , রবীন্দ্র-রচনাবলী “ভারি মাথা ধরিয়াছে।” বলিয়া তাকিয়ায় ঠেস দিয়া পড়িল । আশা সে-কথা শুনিয়া এবং মহেঞ্জের মুখের ভাব দেখিয়া শশব্যস্ত হইয়া উঠিল— কী করা কর্তব্য, স্থির করিবার জন্য বিনোদিনীর মুখের দিকে চাহিল। বিনোদিনী বেশ জানিত ব্যাপারটা গুরুতর নহে, তৰু অত্যন্ত উদবিগ্নভাবে কহিল, “অনেকক্ষণ বসিয়া আছ, একটুখানি শোও । আমি ওডিকলোন আনিয়া দিই ।” মহেন্দ্র বলিল, “থাক, দরকার নাই।” বিনোদিনী শুনিল না, দ্রুতপদে ওডিকলোন বরফ জলে মিশাইয়া উপস্থিত করিল। আশার হাতে ভিজা রুমাল দিয়া কহিল, "মহেন্দ্রবাবুর মাথায় বাধিয়া দাও।” মহেন্দ্র বার বার বলিতে লাগিল, “থাক্‌ না ।” বিহারী অবরুদ্ধহাস্তে নীরবে অভিনয় দেখিতে লাগিল। মহেন্দ্র সগর্বে ভাবিল, “বিহারীটা দেখুক, আমার কত অাদর।” আশা বিহারীর সম্মুখে লজ্জাকম্পিত হস্তে ভালো করিয়া বাধিতে পারিল না— ফোটাখানেক ওডিকলোন গড়াইয়া মহেন্দ্রের চোখে পড়িল । বিনোদিনী আশার হাত হইতে রুমাল লইয়া মুনিপুণ করিয়া বাধিল এবং আর-একটি বস্ত্রখণ্ডে ওডিকলোন ভিজাইয়া অল্প-অল্প করিয়া নিংড়াইয়া দিল— আশা মাথায় ঘোমটা টানিয়া পাখা করিতে লাগিল । বিনোদিনী স্নিগ্ধস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, “মহেন্দ্রবাবু, আরাম পাচ্ছেন কি ৷” এইরূপে কণ্ঠস্বরে মধু ঢালিয়া দিয়া বিনোদিনী দ্রুতকটাক্ষে একবার বিহারীর মুখের দিকে চাহিয়া লইল । দেখিল, বিহারীর চক্ষু কৌতুকে হাসিতেছে। সমস্ত ব্যাপারটা তাহার কাছে প্রহসন। বিনোদিনী বুঝিয়া লইল, এ লোকটিকে ভোলানো সহজ ব্যাপার নহে— কিছুই ইহার নজর এড়ায় না । বিহারী হাসিয়া কহিল, “বিনোদ-বোঠান, এমনতরো শুশ্ৰষা পাইলে রোগ সারিবে না, বাড়িয়া যাইবে।” i বিনোদিনী । তা কেমন করিয়া জানিব, আমরা মুখ মেয়েমাচুর্য। আপনাদের ডাক্তারিশাস্ত্রে বুঝি এইমতো লেখা আছে । বিহারী। আছেই তো । সেবা দেখিয়া আমারও কপাল ধরিয়া উঠিতেছে । কিন্তু পোড়াকপালকে বিনা-চিকিৎসাতেই চটপট সারিয়া উঠিতে হয় । মহিনদার কপালের জোর বেশি। বিনোদিনী ভিজা বস্ত্রখণ্ড রাখিয় দিয়া কহিল, “কাজ নাই, বন্ধুর চিকিৎসা बकूप्ङहे कबन ”