পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

yტპტ রবীন্দ্র-রচনাবলী মহাপঞ্চক। উপাধ্যায়, আমি তোমাকে বলি নি একজটা দেবীর শাপ আরম্ভ হয়েছে ? দেখছ, কী করে তিনি আমাদের সকলের বুদ্ধিকে বিচলিত করে তুলছেন— ক্রমে দেখবে অচলায়তনের একটি পাথরও আর থাকবে না । পঞ্চক । না, থাকবে না, থাকবে না, পাথরগুলো সব পাগল হয়ে যাবে ; তারা কে কোথায় ছুটে বেরিয়ে পড়বে, তারা গান ধরবে— ওরে ভাই, নাচ রে ও ভাই নাচ রে— আজ ছাড়া পেয়ে বঁাচ রে,— লাজভয় ঘুচিয়ে দে রে ; তোরে আজ থামায় কে রে ! মহাপঞ্চক । উপাধ্যায়, ই করে দাড়িয়ে দেখছ কী । সর্বনাশ শুরু হয়েছে, বুঝতে পারছ না। ওরে সব ছন্নমতি মূৰ্খ, অভিশপ্ত বর্বর, আজ তোদের নাচবার দিন ? পঞ্চক । সর্বনাশের বাজনা বাজলেই নাচ শুরু হয় দাদা । মহাপঞ্চক। চুপ কর লক্ষ্মীছাড়া। ছাত্ৰগণ, তোমরা আত্মবিশ্বত হয়োনা। ঘোর বিপদ আসন্ন সে-কথা স্মরণ রেখে | বিশ্বম্ভর । আচার্যদেব পায়ে ধরি, সুভদ্রকে আমাদের হাতে দিন, তাকে তার প্রায়শ্চিত্ত থেকে নিরস্ত করবেন না । আচার্য । না বংস, এমন অনুরোধ করে না । সঞ্জীব । ভেবে দেখুন, সুভদ্রের কতবড়ো ভাগ্য। মহাতামস ক-জন লোকে পারে । ও যে ধরাতলে দেবত্ব লাভ করবে । আচার্য । গায়ের জোরে দেবতা গড়বার পাপে আমাকে লিপ্ত ক’রো না । সে মানুষ, সে শিশু, সেইজন্যেই সে দেবতাদের প্রিয় । জয়োত্তম। দেখুন আপনি আমাদের আচার্য, আমাদের প্রণম্য, কিন্তু যে অন্যায় কাজ করছেন, তাতে আমরা বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হব । আচার্য । করে, বলপ্রয়োগ করে, আমাকে মেনে না, আমাকে মারে, আমি অপমানেরই যোগ্য, তোমাদের হাত দিয়ে আমার যে শাস্তি আরম্ভ হল তাতেই বুঝতে পারছি গুরুর আবির্ভাব হয়েছে। কিন্তু সেই জন্যেই বলছি শাস্তির কারণ আর বাড়তে দেব না । সুভদ্রকে তোমাদের হাতে দিতে পারব না । বিশ্বম্ভর। পারবেন না ? আচার্য । না । মহাপঞ্চক। তাহলে আর দ্বিধা করা নয়। বিশ্বম্ভর, এখন তোমাদের উচিত ওঁকে