পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী মা বললেন, “হায় রে কপাল । বোঝাবই বা কারে । তোমার এ সংসারে ভরা ভোগের মধ্যখানে দুয়ার এ টে পলে পলে শুকিয়ে মরবে ছাতি ফেটে একলা কেবল একটুকু ঐ মেয়ে, ত্রিভুবনে অধৰ্ম আর নেই কিছু এর চেয়ে । তোমার পুথির শুকনো পাতায় নেই তো কোথাও প্রাণ, দরদ কোথায় বাজে সেটা অস্তৰ্যামী জানেন ভগবান ।” বাপ একটু হাসল কেবল, ভাবলে, “cময়েমাহুষ হৃদয়তাপের ভাপে-ভরা ফাহস । জীবন একটা কঠিন সাধন—নেই সে ওদের জ্ঞান ।” এই বলে ফের চলল পড়া ইংরেজি সেই প্রেমের উপাখ্যান । দুখের তাপে জলে জলে অবশেষে নিবল মায়ের তাপ ; সংসারেতে এক পড়লেন বাপ । বড়ো ছেলে বাস করে তার স্ত্রীপুত্রদের সাথে বিদেশে পাটনাতে । দুই মেয়ে তার কেউ থাকে না কাছে, শ্বশুরবাড়ি আছে । একটি থাকে ফরিদপুরে, আরেক মেয়ে থাকে আরো দূরে মাদ্রাজে কোন বিন্ধ্যগিরির পার । পড়ল মঞ্জলিকার পরে বাপের সেবাভার । রাধুনে ব্রাহ্মণের হাতে পেতে করেন ঘৃণা, স্ত্রীর রান্না বিনা অন্নপানে হত না তার রুচি । সকালবেলায় ভাতের পালা, সন্ধ্যাবেলায় রুটি কিংবা লুচি ; ভাতের সঙ্গে মাছের ঘটা, ভাজান্ডুজি হত পাচটা-ছটা ;