পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্ম రిఫ్స్(! পুরুষকে জানিয়াছে, আজ আমরা মানুষের সেই আশ্চৰ জ্ঞানের গৌরব লইয়া উৎসব করিতে বসিয়াছি । যে জ্ঞানের শক্তি কোনো সংকীর্ণত কোনো নিত্যনৈমিত্তিক আবশ্বকের মধ্যে বদ্ধ থাকিতে চাহে না, ষে জ্ঞানের শক্তি কেবলমাত্র মুক্তির আনন্দ উপলব্ধি করিবার জন্য সীমাহীনের মধ্যে পরম সাহসের সহিত আপন পক্ষ বিস্তার করিয়া দেয়, যে তেজস্ব জ্ঞান আপন শক্তিকে কোনো প্রয়োজনসাধনের উপায়রূপে নহে, পরন্তু চরমশক্তিরূপেই অমুভব করিবার জন্য অগ্রসর—মকুন্তত্বের মধ্যে অদ্য আমরা সেই জ্ঞান সেই শক্তিকে স্পর্শ করিয়া কৃতাৰ্থ হইব । কত-সহস্ৰ-বংসর পূর্বে মানুষ একদা এই কথা উচ্চারণ করিয়াছে আনন্দং ব্রহ্মণে বিধান ন বিভেতি কুতশচন । ব্রহ্মের আনন্দ যিনি জানিয়াছেন, তিনি কিছু হইতেই ভয় পান না । এই পৃথিবীতে যেখানে প্রবল দুর্বলকে পীড়ন করিতেছে, যেখানে ব্যাধি-বিচ্ছেদমৃত্যু প্রতিদিনের ঘটনা, বিপদ যেখানে অদৃপ্ত থাকিয়া প্রতি পদক্ষেপে আমাদের প্রতীক্ষা করে এবং প্রতিকারের উপায় যেখানে অধিকাংশস্থলে আমাদের আয়ত্তাধীন নহে, সেখানে মানুষ সমস্ত প্রাকৃতিক নিয়মের উর্ধ্বে মস্তক তুলিয়া এ কী কথা বলিয়াছে যে, আনন্দং ব্রহ্মণো বিদ্বান ন বিভেতি কুতশচন! আজ আমরা দুর্বল মানুষের মুখের এই প্রবল অভয়বাণী লইয়া উংসব করিতে বসিয়াছি । সহস্রশীর্ষ ভয়ের করাল কবলের সম্মুখে দাড়াইয়া যে মানুষ অকুষ্ঠিতচিত্তে বলিতে পারিয়াছে, ব্রহ্ম আছেন, ভয় নাই— অদ্য আপনাকে সেই মানুষের অন্তর্গত জানিয়া গৌরব লাভ করিব। বহুসহস্রবংসর পূর্বের উচ্চারিত এই বাণী আজিও ধ্বনিত হইতেছে— তদেতৎ প্রেয়ঃ পুত্রাং প্রেয়ো বিত্তাৎ প্রেয়োহন্তস্মাং সৰ্ব্বন্মাৎ অম্ভরতর যদয়মাত্মা । অন্তরতর এই যে আত্মা, ইনি এই পুত্র হইতে প্রিয়, বিত্ত হইতে প্রিয়, অন্ত সমস্ত হইতেই প্রিয় । সংসারের সমস্ত স্নেহপ্রেমের সামগ্রীর মধ্যে মানুষের যে প্রেম সম্পূর্ণ তৃপ্ত হয় নাই, সংসারের সমস্ত প্রিয়পদার্থের অন্তরে তাহার অন্তরতর যে প্রিয়তম, যিনি সমস্ত আত্মীয়পরের অন্তরতর, যিনি সমস্ত দূৰ্ব-নিকটের অন্তরতর, তাহার প্রতি যে প্রেম এমন প্রবল আবেগে এমন অসংশয়ে আকৃষ্ট হইয়াছে—আমরা জানি, মানুষের যে পরমতম প্রেম আপনার সমস্ত প্রিয়সামগ্রীকে একমুহূর্তে বিসর্জন দিতে উষ্ঠত হয়, মানুষের সেই পরমাশ্চর্য প্রেমশক্তির গৌরব অন্ত আমরা উপলব্ধি করিয়া উৎসব করিতে সমা হইয়াছি। *I. সস্তানের জন্ত আমরা মানুষকে দুঃসাধ্যকর্মে প্রবৃত্ত হইতে দেখিয়াছি, অনেক