রবীন্দ্র-রচনাবলী دس8b মাঝখানটি হতে একটি শিষ উঠে একেবারে স্তরে স্তরে ফসলে ভরে যাবে।” ষে ফুল ফোটে নি আলোক প্রতিদিন সেই ফুলের প্রতীক্ষা নিয়ে আসছে—যে ফসল ধরে নি আলোকের বাণী সেই ফসলের নিশ্চিত আশ্বাসে পরিপূর্ণ। এই জ্যোতির্ময় আশা প্রতিদিনই পুপকুঞ্জকে এবং শস্তক্ষেত্রকে দেখা দিয়ে যাচ্ছে । 卿 কিন্তু এই প্রতিদিনের আলোক, এ তো কেবল ফুলের বনে এবং শস্তের খেতে আসছে না। এ যে রোজই সকালে আমাদের ঘুমের পর্দা খুলে দিচ্ছে। আমাদেরই কাছে এর কি কোনো কথা নেই। আমাদের কাছেও এই আলো কি প্রত্যহ এমন কোনো আশা আনছে না, যে আশার সফল মূর্তি হয়তো কুঁড়িটুকুর মতে নিতান্ত অন্ধভাবে আমাদের ভিতরে রয়েছে, যার শিষটি এখনও আমাদের জীবনের কেন্দ্রস্থল থেকে উর্ধ্ব আকাশের দিকে মাথা তোলে নি ? আলো কেবল একটিমাত্র কথা প্রতিদিন আমাদের বলছে—“দেখো ।” বাস । “একবার চেয়ে দেখো।” আর কিছুই না । so আমরা চোখ মেলি, আমরা দেখি । কিন্তু সেই দেখাটুকু দেখার একটু কুঁড়িমাত্র, এখনও তা অন্ধ । সেই দেখায় দেখার সমস্ত ফসল ধরবার মতো স্বৰ্গাভিগামী শিষটি এখনও ধরে নি। বিকশিত দেখা এখনও হয় নি, ভরপুর দেখা এখনও দেখি নি । কিন্তু তবু রোজ সকালবেলায় বহুষোজন দূর থেকে আলো এসে বলছে- দেখো । সেই যে একই মন্ত্র রোজই আমাদের কানে উচ্চারণ করে যাচ্ছে তার মধ্যে একটি অশ্রান্ত আশ্বাস প্রচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে—আমাদের এই দেখার ভিতরে এমন একটি দেখার অঙ্কুর রয়েছে যার পূর্ণ পরিণতির উপলব্ধি এখনও আমাদের মধ্যে জাগ্রত হয়ে ওঠে নি। কিন্তু এ-কথা মনে ক’রে না আমার এই কথাগুলি অলংকারমাত্র। মনে ক’রে না, আমি রূপকে কথা কছি। আমি জ্ঞানের কথা ধ্যানের কথা কিছু বলছি নে, আমি নিতান্তই সরলভাবে চোখে দেখার কথাই বলছি । আলোক যে-দেখাটা দেখায় সে তো ছোটােখাটাে কিছুই নয়। শুধু আমাদের নিজের শষ্যাটুকু শুধু ঘরটুকু তো দেখায় না-দিগন্তবিস্তৃত আকাশমণ্ডলের নীলোলে থালাটির মধ্যে যে সামগ্ৰী সাজিয়ে সে আমাদের সম্মুখে ধরে, সে কী অস্তুত জিনিস । তার মধ্যে বিস্ময়ের ষে অন্ত পাওয়া যায় না । আমাদের প্রতিদিনের যেটুকু দরকার তার চেয়ে সে যে কতই বেশি। 够 , এই ৰে বৃহৎ ব্যাপারটা আমরা রোজ দেখছি এই দেখাটা কি নিতান্তই একটা । বাহুল্য ব্যাপার। এ কি নিতান্ত অকারণে মুক্তহস্ত ধনীর অপব্যয়ের মতো আমাদের