পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રાજે রবীন্দ্র-রচনাবলী “সময় হল ? মিথ্যা কথা । সময় পার হয়ে গেছে— এখন ওষুধ খাওয়ানো কেবল ফাকি দিয়ে সাৰনা করা। অামার তার কোনো দরকার নেই । আমি মরতে ভয় করি নে। মালি, যমের চিকিৎসা চলছে, তার উপরে আবার সব ডাক্তার জড়ো করেছ কেন— বিদায় ক’রে দাও, সব বিদায় ক’রে দাও। এখন আমার একমাত্র তুমি — আর আমার কাউকে দরকার নেই –কাউকে না— কোনো মিথ্যাকেই না।”

  • আপনার এই উত্তেজনা ভালো হচ্ছে না।” “তা হলে তোমরা যাও, আমাকে উত্তেজিত কোরো না – মালি, ডাক্তার গেছে ? আচ্ছ, তা হলে তুমি এই বিছানায় উঠে বোসো— আমি তোমার কোলে মাথা দিয়ে একটু শুই ।”
  • আচ্ছা, শোও, বাবা, লক্ষ্মীট, একটু ঘুমোও ।” “ন, মাসি, ঘুমোতে বোলো না— ঘুমোতে ঘুমোতে হয়তো আর ঘুম ভাঙবে না। এখনো আর-একটু আমার জেগে থাকবার দরকার আছে। তুমি শব্দ শুনতে পাচ্ছ না ? ঐ যে আসছে। এখনই আসবে।”

(? “বাবা যতীন, একটু চেয়ে দেখো— ঐ যে এসেছে। একবারটি চাও।”

  • কে এসেছে । স্বপ্ন ?”

“স্বপ্ন নয়, বাবা, মণি এসেছে— তোমার শ্বশুর এসেছেন ।” “তুমি কে ?” “চিনতে পারছ না, বাবা, ঐ তো তোমার মণি । - “মণি, সেই দরজাটা কি সব খুলে গিয়েছে।”

  • সব খুলেছে, বাপ আমার, সব খুলেছে।”

“না মাসি, আমার পায়ের উপর ও শাল নয়, ও শাল নয়, ও শাল মিথ্যে, ও শাল ফাকি ৷” “শাল নয়, যতীন । বউ তোর পায়ের উপর পড়েছে- ওর মাথায় হাত রেখে একটু আশীৰ্বাদ কর – অমন ক’রে র্কাদিস নে, বউ, কাদবার সময় আসছে— এখন একটুখানি চুপ কর।” আশ্বিন, ১৩২১