পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૪૨ রবীন্দ্র-রচনাবলী তৃতীয় পথিক । শোনো একবার, আমি যে ভোর থেকে এখানে দাড়িয়ে—তখনও কাক ডাকে নি—-এতক্ষণ ছিলে কোথায় ? রাজা, আমি বিক্রমস্থলীর ভদ্রসেন; ভক্তকে স্মরণ রেখো । রাজবেশী । তোমাদের ভক্তিতে বড়ো প্রীত হলেম । | বিরাজ দত্ত। মহারাজ, আমাদের অভাব বিস্তর-—এতদিন দর্শন পাই নি জানাব কাকে ? রাজবেশী । তোমাদের সমস্ত অভাব মিটিয়ে দেব । [ প্রস্থান প্রথম পথিক । ওরে পিছিয়ে থাকলে চলবে না--ভিড়ে মিশে গেলে রাজার চোপে পড়ব না । দ্বিতীয় পথিক ! দেখ দেখ একবার নরোত্তমের কাগুথানা দেখ! আমরা এত লোক আছি সবাইকে ঠেলেঠলে কোথা থেকে এক তালপাতার পাপা নিয়ে রাজাকে বাতাস করতে লেগে গেছে । মাধব । তাই তো হে লোকটার আম্পর্ধ তো কম নয় । * দ্বিতীয় পথিক । ওকে জোর করে ধরে সরিয়ে দিতে হচ্ছে-ও কি রাজার পাশে দাড়াবার যুগ্যি । মাধব । ওহে রাজা কি আর একটু বুঝবে না ? এ যে অতিভক্তি । প্রথম পথিক । না হে না-রাজার বোঝে না কিছু— হয়তো ওই তালপাপার হাওয়া পেয়েই ভুলবে। [ সকলের প্রস্থান ঠাকুরদাকে লইয়া কুস্তের প্রবেশ কুম্ভ । এখনই এই রাস্ত দিয়েই যে গেল । ঠাকুরদা। রাস্তা দিয়ে গেলেই রাজা হয় নাকি রে । কুম্ভ। না দাদা, একেবারে স্পষ্ট চোথে দেপা গেল—একজন না দুজন না, রাস্তার দুধারের লোক তাকে দেখে নিয়েছে। ঠাকুরদা। সেইজন্তেই তো সন্দেহ। কবে আমার রাজা রাস্তার লোকের চোপ ধাদিয়ে বেড়ায় । এমন উৎপাত তো কোনোদিন করে না ! কুম্ভ। তা আজকে যদি মজি হয়ে থাকে বলা যায় কী । ঠাকুরদা। বলা যায় রে বলা যায়—আমার রাজার মজি বরাবর ঠিক আছে-- ঘড়ি-ঘড়ি বদলায় না । কুম্ভ। কিন্তু কী বলব দাদা—একেবারে ননির পুতুলটি। ইচ্ছে করে সর্বাঙ্গ দিয়ে তাকে ছায়া করে রাখি !