পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের কবিতা ミbペ) বললে, “একখানা আস্ত নিবারণ চক্রবর্তী তুমি নিশ্চয় আগে থাকতে গড়ে তুলে পকেটে করে নিয়ে এসেছ, কেবলমাত্র ভালোমাতুষদের বোকা বানাবার জন্যে ।” অমিত বললে, “অনাগতকে যে-মানুষ এগিয়ে নিয়ে আসে তাকেই বলে অনাগত'বিধাতা। আমি তাই। নিবারণ চক্রবর্তী আজ মর্তে এসে পড়ল, কেউ তাকে আর ঠেকাতে পারবে না।” । সিসি অমিতকে নিয়ে মনে-মনে খুব একটা গৰ্ব বোধ করে। সে বললে, “আচ্ছা অমিত, তুমি কি সকালবেল উঠেই সেদিনকার মতো তোমার যত শানিয়ে-বল৷ কথা বানিয়ে রেখে দাও ?” অমিত বললে, “সম্ভবপরের জন্যে সব সময়েই প্রস্তুত থাকাই সভ্যতা ; বর্বরতা পৃথিবীতে সকল বিসয়েই অপ্রস্তুত । এ-কথাটাও আমার নোট বইয়ে লেপা আছে।” “কিন্তু তোমার নিজের মত বলে কোনো পদার্থই নেই ; যথন যেটা বেশ ভালো শোনায় সেইটেই তুমি বলে বস।” “আমার মনট আয়না, নিজের বাধা মতগুলো দিয়েই চিরদিনের মতো যদি তাকে আগাগোড় লেপে রেপে দিতুম তাহলে তার উপরে প্রত্যেক চলতি মুহূর্তের প্রতিবিদ পড়ত না ।” সিসি বললে, “আমি, প্রতিবিম্ব নিয়েই তোমার জীবন কাটবে।” २. ংঘাত অমিত বেছে বেছে শিলঙ পাহাড়ে গেল । তার কারণ, সেখানে ওর দলের লোক কেউ যায় না। আরও একটা কারণ, ওখানে কস্তাদায়ের বন্যা তেমন প্রবল নয়। অমিতর হৃদয়টার পরে যে-দেবতা সর্বদা শরসন্ধান করে ফেরেন, তার আনাগোন ফ্যাশনেবল পাড়ায় । দেশের পাহাড়-পর্বতে যত বিলাসী বসতি আছে তার মধ্যে শিলঙে এদের মহলে তার টার্গেট প্র্যাকটিসের জায়গা সব-চেয়ে সংকীর্ণ। বোনেরা মাথা বাঁকানি দিয়ে বললে, “যেতে হয় একলা যাও, আমরা যাচ্ছি নে ৷” বঁ হাতে হাল কায়দার বেঁটে ছাতা, ডান হাতে টেনিস ব্যাট, গায়ে নকল পারসিক শালের ক্লোক পরে বোনরা গেল চলে দাঞ্জিলিঙে। বিমি বোস আগেভাগেই সেখানে গিয়েছে । যখন ভাইকে বাদ দিয়ে বোনদের সমাগম হল তখন সে চারদিক চেয়ে আবিষ্কার করলে দাৰ্জিলিঙে জনতা আছে মানুষ নেই।