পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

થ রবীন্দ্র-রচনাবলী কার্ষে প্রবৃত্ত হইবার আরম্ভে এই পণ করিয়া বসিতে হইবে যে, যতদিন না সুযোগ্য । হুইব ততদিন অজ্ঞাতবাস অবলম্বন করিয়া থাকিব । . . . . নির্মাণ হইবার অবস্থায় গোপনের আবগুক। বীজ মৃত্তিকার নিয়ে নিহিত থাকে । ভ্ৰাণ গর্ভের মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে রক্ষিত হয় । শিক্ষাবস্থায় বালককে সংসারে অধিক ‘ পরিমাণে মিশিতে দিলে সে প্রবীণ সমাজের মধ্যে গণ্য হইবার দুরাশায় প্রবীণদিগের o অযথা অনুকরণ করিয়া অকালপক্ক হইয়া যায়। সে মনে করে সে একজন গণ্যমান্ত । লোক হইয়া গিয়াছে। তাহার আর রীতিমতে শিক্ষার প্রয়োজন নাই—বিনয় তাহার পক্ষে বাহুল্য | & পাণ্ডবেরা পূর্বগৌরব গ্রহণ করিতে প্রবৃত্ত হইবার পূর্বে অজ্ঞাতবাসে থাকিয় বল সঞ্চয় করিয়াছেন । সংসারে উদযোগপর্বের পূর্বে অজ্ঞাতবাসের পর্ব । আমাদেরও এখন আত্মনির্মাণ-জাতিনির্মাণের অবস্থা, এখন আমাদের অজ্ঞাতবাসের সময় | *r কিন্তু এমনি আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা বড়োই বেশি প্রকাশিত হইয়া পড়িয়াছি । আমরা নিতান্ত অপরিপক্ক অবস্থাতেই অধীরভাবে ডিম্ব ভাঙিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছি, এখন প্রতিকূল সংসারের মধ্যে এই দুর্বল অপরিণত শরীরের পুষ্টিসাধন বড়ে কঠিন হইয়া পড়িয়াছে । আমরা আজ পৃথিবীর রণভূমিতে কী অস্ত্র লইয়া আসিয়া দাড়াইলাম ? কেবল বক্তৃতা এবং আবেদন ? কী বর্ম পরিয়া আত্মরক্ষা করিতে চাহিতেছি ? কেবল ছদ্মবেশ ? এমন করিয়া কতদিনই বা কাজ চলে এবং কতটুকুই বা ফল হয় ? একবার নিজেদের মধ্যে অকপটচিত্তে সরলভাবে স্বীকার করিতে দোষ কী যে, এখনও আমাদের চরিত্রবল জন্মে নাই ? আমরা দলাদলি ঈর্ষ ক্ষুদ্রতায় জীৰ্ণ । আমরা একত্র , হইতে পারি না, পরস্পরকে বিশ্বাস করি না, আপনাদের মধ্যে কাহারও নেতৃত্ব স্বীকার . করিতে চাহি না । আমাদের বৃহৎ অনুষ্ঠানগুলি বৃহং বুদবুদের মতো ফাটিয়া যায় ; . আরম্ভে ব্যাপারটা খুব তেজের সহিত উদভিন্ন হইয় উঠে দুইদিন পরেই সেটা প্রথমে - বিচ্ছিন্ন, পরে বিকৃত, পরে নির্জীব হইয়া যায়। যতক্ষণ না যথার্থ ত্যাগস্বীকারের সময় o আসে ততক্ষণ আমরা ক্রীড়াসক্ত বালকের মতো একটা উদযোগ লইয়া উন্মত্ত হইব। থাকি, তার পরে কিঞ্চিং ত্যাগের সময় উপস্থিত হইলেই আমরা নানান ছুতার স্ব च शूदरं । সরিয়া পড়ি । আত্মাভিমান কোনো কারণে তিলমাত্র ক্ষুণ্ণ হইলে উদ্দেশ্বের মহত্বসম্বন্ধে আমাদের আর কোনো জ্ঞান থাকে না। যেমন করিয়া হউক কাজ আরম্ভ হইতে ন : হইতেই তপ্ত তপ্ত নামটা চাই। বিজ্ঞাপন, রিপোর্ট, ধুমধাম এবং খ্যাতিটা যথেষ্টখরিমাণে