পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দশম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रांछ 2छ 8Գծ ইহাতে একদিকে বেদন যতই দুঃসহ হইতেছে আর-একদিকে অসাড়ত ও অবজ্ঞা ততই গভীরতা লাভ করিতেছে । এইরূপ অবস্থাই যদি টিকিয়া যায় তবে ইহাতে একদিন না একদিন বড় আনিয়া উপস্থিত করিবে তাহাতে সন্দেহ নাই। " এইরূপ কৃতকটা ঐক্য থাকা সত্ত্বেও তথাপি আমাদিগকে বলিতে হুইবে বিপ্লবের পূর্বে আমেরিকা ও ফ্রান্সের সন্মুখে যে একমাত্র সমস্ত বর্তমান ছিল—অর্থাৎ ষে-সমস্তাটির মীমাংসার উপরেই তাহাদের মুক্তি সম্পূর্ণ নির্ভর করিত আমাদের সম্মুখে সেই সমস্তাটি নাই। অর্থাং আমরা যদি দরখাস্তের জোরে বা গায়ের জোরে ইংরেজকে ভারতবর্ষ হইতে বিদায় লইতে রাজি করিতে পারি তাহা হইলেও আমাদের সমস্তার কোনো মীমাংসাই হয় না ;–তাহা হইলে হয় ইংরেজ আবার ফিরিয়া আসিবে, নয়, এমন কেহু আসিবে যাহার মুখের গ্রাস এবং পেটের পরিধি ইংরেজের চেয়ে হয়তে ছোটো ম{ হইতে পারে। এ-কথা বলাই বাহুল্য, যে-দেশে একটি মহাজাতি বাধিয়া ওঠে নাই সে-দেশে স্বাধীনতা হইতেই পারে না। কারণ স্বাধীনতার “স্ব” জিনিসটা কোথায় ? স্বাধীনতা কাহার স্বাধীনতা ? ভারতবর্ষে বাঙালি যদি স্বাধীন হয় তবে দাক্ষিণাত্যের নায়র জাতি নিজেকে স্বাধীন বলিয়া গণ্য করিবে না এবং পশ্চিমের জাঠ যদি স্বাধীনত লাভ করে তবে পূর্বপ্রাস্তের আসামি তাহার সঙ্গে একই ফল পাইল বলিয়া গৌরব করিবে না। এক বাংলাদেশেই হিন্দুর সঙ্গে মুসলমান যে নিজের ভাগ্য মিলাইবার জষ্ঠ প্রস্তুত এমন কোনো লক্ষণ দেখা যাইতেছে না। তবে স্বাধীন হইবে কে ? হাতের সঙ্গে পা, পায়ের সঙ্গে মাখ। যখন একেবারে পৃথক হইয়া হিসাব মিলাইতে থাকে তখন লাভ বলিয়। জিনিসটা কাহার ? এমন তর্কও শুন৷ ষায় যে, যতদিন আমরা পরের কড়া শাসনের অধীন হইয়া থাকিব ততদিন আমরা জাত বাধিয়া তুলিতেই পারিব না পদে পদে বাধা পাইব এবং একত্র মিলিয়া যে-সকল বড়ে বড়ো কাজ করিতে করিতে পরম্পরে মিল হইয় যায় সেই সকল কাজের অবসরই পাইব না। এ-কথা যদি সত্য হয় তবে এ সমস্তার কোনো মীমাংসাই নাই। কারণ, বিচ্ছিন্ন কোনোদিনই মিলিতের সঙ্গে বিরোধ করিয়া জয়লাভ করিতে পারে না ; বিচ্ছিরের মধ্যে সামর্থ্যের ছিন্নতা, উদ্দেশ্নের ছিন্নত, অধ্যবসায়ের ছিন্নতা। বিচ্ছিন্ন জিনিস জড়ের মতো পড়িয়া থাকিলে তবু টকিয়া থাকে কিন্তু কোনো উপায়ে কোন বায়ুবেগে তাহাকে চালনা করিতে গেলেই সে ছড়াইয় পড়ে, সে ভাঙিয়া যায়, তাহার এক অংশ অপৰ অংশকে আঘাত করিতে থাকে ; তাহার অভ্যন্তরের সমস্ত দুর্বলতা নানা মূর্তিতে জাগিয়া উঠিয় তাহাকে বিনাশ