পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দতত্ত্ব (t\రిని পছ” বৈষ্ণব কবিদের গ্রন্থে সচরাচর পহু শব্দের দুই অর্থ দেখা যায়, প্রভু এবং পুনঃ । শ্রদ্ধাস্পদ অক্ষয়চন্দ্র সরকার মহাশয় তাহার প্রকাশিত প্রাচীন কাব্যসংগ্রহের টীকায় লিথিয়াছেন পহু অর্থে প্রভু এবং পহু অর্থে পুনঃ । কিন্তু উভয় অর্থেই পহু শব্দের ব্যবহার এত দেখা গিয়াছে যে, নিশ্চয় বলা যায় এ নিয়ম এক্ষণে আর খাটে না । দীনেন্দ্রবাবু যতগুলি ভণিতা উদ্ধৃত করিয়াছেন প্রায় তাহার সকলগুলিতেই পহু এবং পহু শব্দের অর্থ প্ৰভু । গোবিন্দদাস পন্থ নটবর শেখর অর্থাৎ গোবিন্দদাসের প্রভু নটবর শেখর। () রাধামোহন পহু রসিক সুনাহ অর্থাৎ রাধামোহনের প্রভু রসিক স্ব-নাথ । নরোত্তমদাস পহু নাগর কান, রসিক কলাগুরু তুহু সব জান । ইহার অর্থ এই, তুমি নরোত্তমদাসের প্রভু নাগর কান, তুমি রসিক কলাগুরু, তুমি সকলই জান । এরূপ ভণিতা হিন্দি গানেও দেখা যায়। যথা : তানসেনপ্রভু আকবর। বৈষ্ণব পদে স্থানে স্থানে সমাস ভাঙাও দেখা যায়। যথা : গোবিন্দদাসের পহু হাসিয়া হাসিয়া রহু । কেবল একটা ভণিতায় এই অর্থ খাটে না । রাধামোহন পহু দু হু অতি নিরুপম । এ স্থলে পহু-র ভণে অর্থ না হইলে আর-কোনো অর্থ পাওয়া যায় না। আমি যতদূর আলোচনা করিয়াছি তাহাতে গোবিন্দদাস এবং তাহার অনুকরণ কারী রাধামোহন ব্যতীত আর-কোনো বৈষ্ণব কবিতায় পহু শব্দের এরূপ অর্থ নাই । রাধামোহনেও ভণে অর্থে পহু-র ব্যবহার অত্যন্ত বিরল—দৈবাৎ দুই-একটি যদি পাওয়া যায় । রাধামোহন পহু তুয়া পায়ে নিবেদয়ে। ১ পহু’ (১)— শ্ৰীদীনেন্দ্রকুমার রায় । সাধনা ১২৯৯ জ্যৈষ্ঠ ।