পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় (tఫెసి সে-সম্বন্ধে মতভেদ আছে। আর যা-ই হউক ইহ। ইতিহাস নহে। ইহার সত্যমিথ্যার জন্য মূলে তিনিই দায়ী যিনি জগতে বসন্তের মতো এত বড়ে প্রলাপের অবতারণ। করিয়াছেন । এই ঘরছাড়া দলের মধ্যে বয়স নানা রকমের আছে। কারে কারে চুল পাকিয়াছে কিন্তু সে-খবরটা এখনও তাদের মনের মধ্যে পৌছায় নাই । ইহারা যাকে দাদা বলে তার বয়স সবচেয়ে কম। সে সবে চতুষ্পাঠী হইতে উপাধি লইয়া বাহির হইয়াছে। এখনও বাহিরের হাওয়া তাকে বেশ করিয়া লাগে নাই । এইজন্য সে সবচেয়ে প্রবীণ। আশা আছে বয়স যতই বাড়িবে সে অন্যদের মতোই কাচা হইয়া উঠিবে। বিশ ত্রিশ বছর সময় লাগিতে পারে। ইহারা যাকে সর্দার বলিয়া ডাকে সর্দার ছাড়া তার অন্য কোনো পরিচয় খুজিয়া পাওয়া গেল না। আমার ভয় হইতেছে তত্ত্বজ্ঞানীরা ইহাকে কোনো একটা তত্ত্বের দলে ফেলিয়া ইহার পঞ্চত্ন ঘটাইতে পারেন । কিন্তু আমার বিশ্বাস লোকটা তত্ত্বকথা নহে, সত্যকারই সর্দার । এই লোকটির কাজ চালাইয়া লওয়া— পথ হইতে পথে, লক্ষ্য হইতে লক্ষ্যে, খেলা হইতে খেলায় । কেহ যে চুপ করিয়া বসিয়া থাকিবে সেট। তার অভিপ্রায় নয়। কিন্তু যেহেতু সত্যকার সর্দার মাত্রেই বাহিরে হাঙ্গামা করে না ভিতরে কথা কয়, এই লোকটিকে রঙ্গমঞ্চে না দেখা গেলেই ইহার পরিচয় সুস্পষ্ট হইবে । এই কাণ্ডটার দৃশ্ব পথে ঘাটে বনে বাদাড়ে। বিশেষ করিয়া তাহার উল্লেখ করার দরকার নাই। যে দলের কথা বলিয়াছি কোনো তালিকায় তাহীদের জনসংখ্যা এ পর্যন্ত নির্দিষ্ট হয় নাই। এজন্য তাহদের সংখ্যার কোনো পরিচয় দেওয়া গেল না। আর, দলের কে যে কোন কথাটা বলিতেছে তারও নিদর্শন রাখিলাম না। যে যেটাখুশি বলিতে পারে। কেবল উহাদের মধ্যে যারা কোনো কারণে বিশেষ ব্যক্তি হইয়৷ উঠিয়াছে তাদেরই কথাগুলোর সঙ্গে তাদের নামের যোগ থাকিবে । নক্ষত্ৰলোকের যে-কবি নীহারিকার কাব্য লেখেন তিনি আপন খেয়ালমতে৷ অনেকখানি আলো ঝাপসা করিয়া আঁকিয়াছেন, তারই মাঝে মাঝে একটা-একটা তারা ফুটিয়া ওঠে। বেশ দেখা যাইতেছে, এই মর্তের লেখকটা তারই নকল করিবার চেষ্টা করে । আলোর নকল কতটা করিতে পারে জানি না কিন্তু ঝাপসা নকল করিতে চমৎকার হাত পাকাইয়াছে। খুব বড়ো দূরবীন এবং খুব জোরালো অণুবীক্ষণ লাগাইয়াও ইহার মধ্যে বস্তু খ জিয়া পাওয়া যাইবে না। আর অর্থ ? অর্থমনৰ্থং ভাবুয়ু নিত্যম। যত বড়ো লেখা তার চেয়ে ভূমিকা বড়ো হইলে লোকের সুবিধা হয়, এমন-কি, ভূমিকাটাই রাখিয়া লেখাটা বাদ দিতে পারিলেও কোনো উৎপাত থাকে না – কিন্তু ফাল্গুন প্রায় শেষ হইয়া আসিল, সময় আর বেশি নাই । ফাল্গুনীর সবুজপত্রে প্রকাশিত ভূমিকাসংবলিত পাঠের এবং গীতিভূমিকার গানগুলির পাণ্ডুলিপি রবীন্দ্র-ভবনে রক্ষিত আছে। বর্তমান সংস্করণের পাঠ তাহার