পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

外園@5後 ২৯৯ সতীশ । সময়বিশেষে লোকবিশেষের জন্য মানুষ প্রাণ দিতে ইচ্ছা করে ; আজকালকার দিনে প্রাণ দেবার অবকাশ খুজে পাওয়া যায় না— অন্তত ধার করবার দুঃখটুকু স্বীকার করবার যে মুখ তাও কি ভোগ করতে দেবে না। আমার পক্ষে যা দুঃসাধ্য আমি তোমার জন্ত তাই করতে চাই নেলি, একেও যদি তুমি নন্দী-সাহেবের নকল বল তবে আমার পক্ষে মর্মান্তিক হয় । নলিনী। আচ্ছ, তোমার যা করবার তা তো করেছ— তোমার সেই ত্যাগস্বীকারটুকু আমি নিলেম— এখন এ জিনিসটা ফিরে নাও। সতীশ । ওটা যদি আমাকে ফিরিয়ে নিতে হয় তবে ওই নেকৃলেসটা গলায় ফাস লাগিয়ে দম বন্ধ করে আমার পক্ষে মরা ভালো । নলিনী। দেন তুমি শোধ করবে কী করে। সতীশ । মার কাছ হতে টাকা পাব । নলিনী। ছি ছি, তিনি মনে করবেন আমার জন্যই তার ছেলের দেনা হচ্ছে । সতীশ । সে কথা তিনি কখনোই মনে করবেন না, তার ছেলেকে তিনি অনেকদিন হতে জানেন । নলিনী । আচ্ছ সে যাই হোক, তুমি প্রতিজ্ঞ করে, এখন হতে তুমি আমাকে দামী জিনিস দেবে না। বড়োজোর ফুলের তোড়ার বেশি আর কিছু দিতে পারবে না । সতীশ । আচ্ছা, সেই প্রতিজ্ঞাই করলেম । - নলিনী। যাক, এখন তবে তোমার গুরু নন্দী-সাহেবের পাঠ আবৃত্তি করে। দেখি, স্তুতিবাদ করবার বিদ্যা তোমার কতদূর অগ্রসর হল। আচ্ছ, আমার কানের ডগা সম্বন্ধে কী বলতে পার বলো— আমি তোমাকে পাচ মিনিট সময় দিলেম । সতীশ । যা বলব তাতে ওই ডগাটুকু লাল হয়ে উঠবে। নলিনী। বেশ বেশ, ভূমিকাটি মন্দ হয় নি। আজকের মতো ওইটুকুই থাকৃ, বাকিটুকু আর-একদিন হবে। এখনই কান ঝাবী করতে শুরু হয়েছে। নবম পরিচ্ছেদ বিধু। আমার উপর রাগ কর যা কর, ছেলের উপর কোরো না । তোমার পায়ে ধরি, এবারকার মতো তার দেনাটা শোধ করে দাও।