○8
রবীন্দ্র-রচনাবলী
অমর্ত
আমার মনে একটুও নেই বৈকুণ্ঠের আশা। —
ওইখানে মোর বাসা যে মাটিতে শিউরে ওঠে ঘাস, যার পরে ঐ মন্ত্র পড়ে দক্ষিনে বাতাস । চিরদিনের আলোক-জাল| নীল আকাশের নীচে যাত্রা আমার নৃত্যপাগল নটরাজের পিছে। ফুল ফোটাবার যে রাগিণী বকুলশাখায় সাধা,
নিষ্কারণে ওড়ার আবেগ চিলের পাথায় বাধা,
সেই দিয়েছে রক্তে আমার ঢেউয়ের দোলাদুলি ; স্বপ্নলোকে সেই উড়েছে স্বরের পাখনা তুলি।
দায়-ভোলা মোর মন মন্দে-ভালোয় সাদায়-কালোয় অঙ্কিত প্রাঙ্গণ
ছাড়িয়ে গেছে দূর দিগন্ত-পানে আপন বঁাশির পথ-ভোলানো তানে ।
দেখা দিল দেহের অতীত কোন দেহ এই মোর
ছিন্ন করি বস্তুবাধন-ডোর । শুধু কেবল বিপুল অনুভূতি, গভীর হতে বিচ্ছুরিত আনন্দময় দু্যতি,
শুধু কেবল গানেই ভাষা যার, পুষ্পিত ফাস্তুনের ছন্দে গন্ধে একাকার ; নিমেষহার চেয়ে-থাকার দূর অপারের মাঝে
ইঙ্গিত যার বাজে । যে দেহেতে মিলিয়ে আছে অনেক ভোরের আলো, নাম-না-জানা অপূর্বেরে যার লেগেছে ভালো,
যে দেহেতে রূপ নিয়েছে অনির্বচনীয়
সকল প্রিয়ের মাঝখানে যে প্রিয়,
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৪
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
