পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

© ᎼᏬ রবীন্দ্র-রচনাবলী অনুসারে আপন ঐতিহাসিক সমস্ত স্বয়ং সমাধান করবে, কিন্তু আপন উন্নতির পথে তারা প্রত্যেকে যে প্রদীপ নিয়ে চলবে তার আলোক পরস্পর সম্মিলিত হয়ে জ্ঞানজ্যোতির সমবায় সাধন করবে। চিত্তের প্রকাশ যখন আমাদের থাকে না তখন আমরা আলোকহীন তারার মতো, অন্য জ্যোতিষ্কের সঙ্গে আমাদের জ্ঞাতিত্বসম্বন্ধ অবরুদ্ধ। চিত্তের আলে,যখন জলে তখনি মানুষের সঙ্গে মাহুষের আত্মীয়তা সত্য হয়ে ওঠে। তাই আজ আমি এই কামনা ঘোষণা করি যে, আমাদের মধ্যে সাধনার মিলন ঘটুক। এবং সেই মিলনে প্রাচ্য মহাদেশ মহতী শক্তিতে জেগে উঠুক— তার সাহিত্য, তার কলা, তার নূতন নিরাময় সমাজনীতি, তার অন্ধসংস্কারমুক্ত বিশুদ্ধ ধর্মবুদ্ধি, তার আত্মশক্তিতে অবসাদহীন শ্রদ্ধা । * আমি আপন দুর্বল দেহের অনুনয় অস্বীকার করে এই দেশে এসেছি তার সর্বপ্রধান কারণটি বক্তৃতার উপসংহারে জানিয়ে যেতে চাই। মানবিকতার দিক থেকে ষা-কিছু শ্রেষ্ঠ পূর্বমহাদেশের আমরা স্বভাবতই তার কাছে মাথা নত করি, যান্ত্রিকতায় যা সুনিপুণ তার কাছে নয়। নিজেকে জয় করে যিনি আপন ভাগ্যের উপর জয়ী হন তাকেই আমরা বীর বলে স্বীকার করি। বর্তমান পারস্তরাজের চরিতকথা আমার আপন দেশের প্রাস্তে বসেও শুনেছি এবং সেই সঙ্গে দেখতে পেয়েছি দূরে দিকৃণীমায় নবপ্রভাতের সুচনা। বুঝেছি, এশিয়ার কোনোস্থানে যথার্থ একজন লোকনেতারূপে স্বজাতির ভাগ্যনেতার অভু্যদয় হয়েছে— তিনি জানেন কী করে বর্তমান যুগের আত্মরক্ষণ-উপযোগী শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, কী করে প্রতিকূল শক্তিকে নিরস্ত করতে হবে, বিদেশ থেকে যে সর্বগ্রাসী লোভের চক্রবাত্যা নিষ্ঠুর বলে এশিয়াকে চারি দিকে আঘাত করতে উদ্যত কী করে তাকে প্রতিহত করা সম্ভব। এশিয়ার যে অংশেই থাকি-না কেন এমন মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ, তার চরিত্র আমাদের সকলেরই পক্ষে সম্পদ– বীরশক্তিতে র্তার স্বজাতির মধ্যে তিনি যে প্রাণসঞ্চার করেছেন তা দূর থেকেও আমাদের উদবোধনের সহায়তা করবে তাতে সন্দেহ নেই। ভারতবর্ষের হয়ে, এশিয়ার হয়ে আমি তাকে অভিবাদন করি এবং তার করম্পর্শের স্মৃতি আমার দেশে বহন করে নিয়ে যাই । —বিচিত্রা। মাঘ ১৩৩৯, পৃ. ৯-১২ ৪৮৬ পৃষ্ঠার শেষ অনুচ্ছেদের পরে আমার জন্মদিনে এখানকার বহুলোকের কাছ থেকে আমি যে বহু সমাদর পেয়েছি একত্রে তার উত্তর দেবার জন্যে একটি কবিতা রচনা করেছিলুম। এখানকার মজলিস