নবীন סף(
গোপনে এসে গেলে দেখি নাই আঁখি মেলে। আঁধারে দুঃখডোরে
বঁধিল মোরে, ভূষণ পরালে বিরহবেদন-ঢালা ।
হে বনস্পতি শাল, অবসানের অবসাদকে তুমি দূর করে দিলে। তোমার অক্লাস্ত মঞ্জরীর মধ্যে উৎসবের শেষবেলাকার ঐশ্বর্য, নবীনের শেষ জয়ধ্বনি তোমার বীরকণ্ঠে । অরণ্যভূমির শেষ আনন্দিত বাণী তুমি শুনিয়ে দিলে যাবার পথের পথিককে, বললে ‘পুনর্দশনায় । তোমার আনন্দের সাহস বিচ্ছেদের সামনে এসে মাথা তুলে দাড়াল।
ক্লাস্ত যখন আম্রকলির কাল,
মাধবী ঝরিল ভূমিতলে অবসন্ন, সৌরভধনে তখন তুমি হে শাল,
বসন্তে করে। ধন্ত । সাস্তুনা মাগি দাড়ায় কুঞ্জভূমি
রিক্তবেলায় অঞ্চল যবে শূন্ত— বনসভাতলে সবার উর্ধ্বে তুমি,
সব অবসানে তোমার দানের পুণ্য ।
এইবার শেষ দেওয়া-নেওয়া চুকিয়ে দাও। দিয়ে যাও তোমার বাহিরের দান, উত্তরীয়ের সুগন্ধ, বাশির গান, আর নিয়ে যাও আমার অন্তরের বেদনা নীরবতার ডালি থেকে।
তুমি কিছু দিয়ে যাও
মোর প্রাণে গোপনে গো । ফুলের গন্ধে, বাঁশির গানে, মৰ্মরমুখরিত পবনে। তুমি কিছু নিয়ে যাও
বেদনা হতে বেদনে— যে মোর অশ্র হাসিতে লীন, যে বাণী নীরব নয়নে ॥
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৯
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
