পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবীন レ8外 ক্লাস্ত যখন আম্রকলির কাল দূরের ডাক এসেছে। পথিক, তোমাকে ফেরাবে কে। তোমার আসা আর তোমার যাওয়াকে আজ এক করে দেখাও। যে পথ তোমাকে নিয়ে আসে সেই পথই তোমাকে নিয়ে যায়, আবার সেই পথই ফিরিয়ে আনে। হে চিরনবীন, এই বঙ্কিম পথেই চিরদিন তোমার রথযাত্রা ; যখন পিছন ফিরে চলে যাও সেই চলে যাওয়ার ভঙ্গিটি আবার এসে মেলে সামনের দিকে ফিরে আসায়— শেষ পর্যন্ত দেখতে পাই নে, হায় হায় করি । এখন আমার সময় হল - বিদায়বেলার অঞ্জলি যা শূন্ত করে দেয় তা পূর্ণ হয় কোনখানে সেই কথাটা শোনা যাক । এ বেলা ডাক পড়েছে কোনখানেআসন্ন বিরহের ভিতর দিয়ে শেষ বারের মতো দেওয়া-নেওয়া হয়ে যাক। তুমি দিয়ে যা ও তোমার বাহিরের দান, তোমার উত্তরীয়ের সুগন্ধ, তোমার বঁাশীর গান, আর নিয়ে যাও এই অন্তরের বেদনা আমার নীরবতার ডালি থেকে । তুমি কিছু দিয়ে যাও খেলা-শুরুও খেলা, খেলা-ভাঙাও খেলা । খেলার আরম্ভে হল বাধন, খেলার শেষে হল বাধন খোলা । মরণে বাচনে হাতে হাতে ধরে এই খেলার নাচন। এই খেলায় পুরোপুরি যোগ দাও— শুরুর সঙ্গে শেষের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিলিয়ে নিয়ে জয়ধ্বনি করে চলে যাও । আজ খেলা-ভাঙার খেলা খেলবি আয় ১ পথিক চলে গেল সুদূরের বাণীকে জাগিয়ে দিয়ে। এমনি করে কাছের বন্ধনকে বারে বারে সে আলগা করে দেয়। একটা কোন অপরিচিত ঠিকানার উদ্দেশ বুকের ভিতর রেখে দিয়ে যায়– জানলায় বসে দেখতে পাই, তার পথ মিলিয়ে গেছে বনরাজিনীলা দিগন্তরেখার ওপারে। বিচ্ছেদের ডাক শুনতে পাই কোন নীলিম কুহেলিকার প্রাস্ত থেকে— উদাস হয়ে যায় মন— কিন্তু সেই বিচ্ছেদের বঁাশিতে মিলনেরই সুর তো বাজে করুণ সাহানায় । বাজে করুণ স্বরে, হায় দূরে এই খেলা-ভাঙার খেলা বীরের খেলা। শেষ পর্যন্ত ষে ভঙ্গ দিল না তারই জয়। বাধন ছিড়ে ষে চলে যেতে পারল, পথিকের সঙ্গে বেরিয়ে পড়ল পথে, তারই জন্যে জয়ের মালা । পিছনে ফিরে ভাঙা খেলনার টুকরো কুড়োতে গেল ষে কৃপণ তার