পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধুনিক সাহিত্য দিগের ন্যায় পৌরাণিক উপাখ্যানের দিকেও গেলেন না— তিনি নিভৃতে বসিয়া নিজের ছন্দে নিজের মনের কথা বলিলেন। র্তাহার সেই স্বগত উক্তিতে বিশ্বহিত দেশহিত অথবা সভামনোরঞ্জনের কোনো উদ্দেশ্য দেখা গেল না। এইজন্য র্তাহার স্বর অন্তরঙ্গরূপে হৃদয়ে প্রবেশ করিয়া সহজেই পাঠকের বিশ্বাস আকর্ষণ করিয়া আনিল । পাঠকদিগকে এইরূপে বিশ্রদ্ধভাবে আপনার নিকটে টানিয়া আনিবার ভাব প্রথম অবোধবন্ধুর গদ্যে এবং অবোধবন্ধুর কবি বিহারীলালের কাব্যে অনুভব করিয়াছিলাম। পৌল-বর্জিনীতে যেমন মানুষের এবং প্রকৃতির নিকট-পরিচয় লাভ করিয়াছিলাম বিহারীলালের কাব্যেও সেইরূপ একটি ঘনিষ্ঠ সঙ্গ প্রাপ্ত হইয়াছিলাম। মনে আছে নিম্ন-উদ্ধৃত শ্লোকগুলির বর্ণনায় এবং সংগীতে মনশ্চক্ষের সমক্ষে স্বন্দর চিত্রপট উদঘাটিত হইয়া হৃদয়কে চঞ্চল করিয়া তুলিত। ‘কভু ভাবি কোনো ঝরনার উপলে বন্ধুর যার ধার— প্রচণ্ড প্রপাতধ্বনি বায়ুবেগে প্রতিধ্বনি চতুর্দিকে হতেছে বিস্তার— গিয়ে তার তীরতরুতলে পুরু পুরু নধর শাদ্বলে ডুবাইয়ে এ শরীর শবসম রব স্থির কান দিয়ে জলকলকলে । যে-সময় কুরঙ্গিণীগণ সবিস্ময়ে ফেলিয়ে নয়ন আমার সে দশা দেখে কাছে এসে চেয়ে থেকে অশ্রািজল করিবে মোচন— সে-সময়ে আমি উঠে গিয়ে, তাহাদের গলা জড়াইয়ে, মৃত্যুকালে মিত্র এলে লোকে যেমি চক্ষু মেলে তেন্নিতর থাকিব চাহিয়ে ।” 8〉や