পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (নবম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

औदनष्ठि 8@@ বাল্যকালে আর-একটি ছোটাে কাগজের পরিচয় লাভ করিয়ছিলাম। তাহার নাম অবোধবন্ধু’ । ইহার আবাধা খণ্ডগুলি বড়দাদার আলমারি হইতে বাহির করিয়া ঠাঁহারই দক্ষিণ দিকের ঘরে খোলা দরজার কাছে বসিয়া বসিয়া কতদিন পড়িয়ছি। এই কাগজেই বিহারীলাল চক্রাবতীর কবিতা প্ৰথম পড়িয়ছিলাম। তখনকার দিনের সকল কবিতার মধ্যে তাঁহাই আমার সব চেয়ে মান হরণ করিয়ছিল। তঁহার সেইসব কবিতা সরল বাঁশির সুরে আমার মনের মধ্যে মাঠের এবং বনের গান বাজাইয়া তুলিত। এই অবোধবন্ধু কাগজেই বিলাতি পীেলবর্জিনী গল্পের সরস বাংলা অনুবাদ পড়িয়া কত চোখের জল ফেলিয়ছি তাহার ঠিকানা নাই। আহা, সে কোন সাগরের তীর ! সে কোন সমুদ্রসমীরকম্পিত নারিকেলের বন! ছাগল-চরা সে কোন পাহাড়ের উপত্যকা! কলিকাতা শহরের দক্ষিণের বারান্দায় দুপুরের রৌদ্রে এল কী মধুর মরীচিকা বিস্তীর্ণ হইত। আর সেই মাথার রঙিন রুমাল-পরা বর্জিনীির সঙ্গে সেই নির্জন দ্বীপের শ্যামল বনপথে একটি বাঙালি বালকের কী প্রেমই জমিয়াছিল ! অবশেষে বঙ্কিমের বঙ্গদর্শন আসিয়া বাঙালির হৃদয় একেবারে লুঠ করিয়া লইল । একে তো তাহার জন্য মােসাম্ভের প্রতীক্ষা করিয়া থাকি,তাম, তাহার পরে বড়োদলের পড়ার শেষের জন্য অপেক্ষা করা আরো বেশি দুঃসহ হইত। বিষবৃক্ষ, চন্দ্ৰশেখর, এখন যে-খুশি সেই অনায়াসে একেবারে একগ্রাসে পড়িয়া ফেলিতে পারে। কিন্তু আমরা যেমন করিয়া মাসের পর মাস, কামনা করিয়া, অপেক্ষা করিয়া, অল্পকালের পড়াকে সুদীর্ঘকালের অবকাশের দ্বারা মনের মধ্যে অনুরাশিত করিয়া, তৃপ্তির সঙ্গে অতৃপ্তি, ভোগের সঙ্গে কৌতুহলকে অনেকদিন ধরিয়া গাথিয়া গাঁথিয়া পড়িতে পাইয়াছি, তেমন করিয়া পড়বার সুযোগ আর-কেহ পাইবে না। শ্ৰীযুক্ত সারদাচরণ মিত্র ও অক্ষয় সরকার মহাশয়ের প্রাচীনকাব্যসংগ্ৰহণ সে-সময়ে আমার কাছে একটি লোভের সামগ্ৰী হইয়াছিল। গুরুজনেরা ইহার গ্রাহক ছিলেন। কিন্তু নিয়মিত পাঠক ছিলেন না। সুতরাং এগুলি জড়ো করিয়া আনিতে আমাকে বেশি কষ্ট পাইতে হইত না। বিদ্যাপতির দুর্বোিধ বিকৃত মৈথিলী পদগুলি অস্পষ্ট বলিয়াই বেশি করিয়া আমার মনোযোগ টানিত । আমিটীকার উপর নির্ভর না করিয়া নিজে বুঝিবার চেষ্টা করিতাম। বিশেষ কোনো দুরূহ শব্দ যেখানে যতবার ব্যবহৃত হইয়াছে সমস্ত আমি একটি ছোটাে বঁধানো খাতায় নোট করিয়া রাখিতাম। ব্যাকরণের বিশেষত্বগুলিও আমার বুদ্ধি অনুসারে যথাসাধ্য টুকিয়া রাখিয়ছিলাম।” বাড়ির আবহাওয়া ছেলেবেলায় আমার একটা মন্ত সুযোগ এই ছিল যে, বাড়িতে দিনরাত্ৰি সাহিত্যের হাওয়া বহিত । মনে পড়ে, খুব যখন শিশু ছিলাম বারান্দার রেলিং ধরিয়া এক-একদিন সন্ধ্যার সময় চুপ করিয়া দাড়াইয়া থাকিতাম । সম্মুখের বৈঠকখানাবাড়িতে আলো জ্বলিতেছে, লোক চলিতেছে, দ্বারে বড়ো বড়ো গাড়ি আসিয়া দাড়াইতেছে। কী হইতেছে ভালো বুঝিতাম না, কেবল অন্ধকারে দাড়াইয়া সেই আলোকমালার দিকে ১ যোগেন্দ্রনাথ ঘোষ কর্তৃক প্রকাশিত মাসিকপত্র ; প্রকাশ এপ্রিল ১৮৬৩, পুনঃপ্রকাশ ফাল্গুন ১২৭৩ ২'পীেল ভঙ্গীনী ; কৃষ্ণকমল ভট্টাচাৰ্য-কর্তৃক “পলবর্জিনিয়া গ্রন্থের ফরাসী ভাবা হইতে অনুবাদ" প্রকাশকাল S (-49 O RPM fè yraAR (FMN y Aà) 8 RPF v Ae-48 ৫ “আমার পূজনীয় দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের কাছে এই সংগ্রহের অনিয়মিত ভাবে প্রকাশিত খণ্ডগুলি আসিত। তঁহাদের পড়া হইতেই আমি এগুলি জড় করিয়া অনিতাম।”-পাণ্ডুলিপি DSuDDSDDD DDDS DBuD BuBuBuS LLLLL LBDt SBDBDDBBB SDuDBSBB BBL