তিন সঙ্গী २२¢ আওয়াজে। প্রদর্শনী বের করলে ছবির, কাগজের বিজ্ঞাপনে তার পরিচয় বেরল আধুনিক ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ আর্টিস্ট অতীককুমার, বাঙালি টিশিয়ান। ও যতই গর্জন করে বললে ‘আমি. আর্টিস্ট’, ততই তার প্রতিধ্বনি উঠতে থাকল একদল লোকের ফাক মনের গুহায়, তারা অভিভূত হয়ে গেল। শিন্য এবং তার চেয়ে বেশি সংখ্যক শিষ্য। জমল ওর পরিমণ্ডলীতে। তার বিরুদ্ধদলকে আখ্য। দিল ফিলিস্টাইন । , বলল বুর্জোয়। 聯 অবশেষে দুর্দিনের সময় অভীক আবিষ্কার করলে যে তার ধনী পিতার তহবিলের কেন্দ্র থেকে আর্টিস্টের নামের পরে যে রজতচ্ছটা বিচ্ছুরিত হত তারই দীপ্তিতে ছিল তাঁর খ্যাতির অনেকখানি উজ্জলতা। সঙ্গে সঙ্গে সে আর-একটি তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিল যে অর্থভাগ্যের বঞ্চনা উপলক্ষ্য করে মেয়েদের নিষ্ঠায় কোনো ইতরবিশেষ ঘটে নি। উপাসিকার শেষ পর্যন্ত দুই চক্ষু বিস্ফারিত করে উচ্চমধুর কণ্ঠে তাকে বলছে আর্টিস্ট। কেবল নিজেদের মধ্যে পরস্পরকে সন্দেহ করেছে যে স্বয়ং তারা দুই-একজন ছাড়া বাকি সরাই আর্টের বোঝে না কিছুই, ভণ্ডামি করে, গা জলে যায়। অভীকের জীবনে এর পরবর্তী ইতিহাস সুদীর্ঘ এবং অস্পষ্ট। ময়লা টুপি আর তেলকালিমাখা নীলরঙের জামা-ইজের পরে বার্নকোম্পানির কারখানায় প্রথমে মিস্ত্রিগিরি ও পরে হেডমিস্ত্রির কাজ পর্যন্ত চালিয়ে দিয়েছে। মুসলমান খালাসিদের দলে মিশে চার পয়সার পরোটা আর তার চেয়ে কম দামের শাস্ত্রনিষিদ্ধ পশুমাংস খেয়ে ওর দিন কেটেছে সস্তায়। লোকে বলেছে, ও মুসলমান হয়েছে ; ও বলেছে, মুসলমান কি নাস্তিকের চেয়েও বড়ে । হাতে যখন কিছু টাকা জমল তখন অজ্ঞাতবাস থেকে বেরিয়ে এসে আবার সে পূর্ণ পরিস্ফুট আর্টিস্টরূপে বোহেমিয়ানি করতে লেগে গেল। শিস্য জুটল, শিস্য জুটল। চশমাপরা তরুণীরা তার স্ট ডিয়োতে আধুনিক বে-আক্র রীতিতে যে-সব নগ্নমনস্তত্ত্বের আলাপ-আলোচনা করতে লাগল, ঘন সিগারেটের ধেয়। জমল তার কালিমা আবৃত করে। পরস্পর পরস্পরের প্রতি কটাক্ষপাত ও অন্ধুলিনির্দেশ করে বললে, পজিটিভ লি ভালগর । বিভা ছিল এই দলের একেবারে বাইরে। কলেজের প্রথম ধাপের কাছেই অভীকের সঙ্গে ওর আলাপ শুরু । অতীকের বয়স তখন আঠারো, চেহারায় নবযৌবনের তেজ বক্বক্ করছে, আর তার নেতৃত্ব বড়োবয়সের ছেলেরাও স্বভাবতই নিয়েছে স্বীকার করে । 弘 ব্রাহ্মসমাজে মাহুষ হয়ে পুরুষদের সঙ্গে মেশবার সংকোচ বিভার ছিল না। কিন্তু কলেজে বাধা ঘটল । তার প্রতি কোনো কোনো ছেলের অশিষ্টতা হাসিতে কটাক্ষে
