পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵՆ রবীন্দ্র-রচনাবলী “আমার সবই জানা আছে। পুরুষের খোরাকে আমিষ পর্যন্ত ভালোই চলে কিন্তু মদ ধরালেই সর্বনাশ । আমার মেয়েটি মদের পাত্র, কানায় কানায় ভরা ’ ।

  • তা হলে কী করতে চাও বলে।” '. “আমার ল্যাবরেটরি দান করতে চাই পাব্লিককে ।” “তোমার একমাত্র মেয়েকে এড়িয়ে দিয়ে ?” “মেয়েকে ? ওকে দান করলে সে দান পৌছবে কোন রসাতলে কী করে জানব আমার টাস্ট সম্পত্তির প্রেসিডেন্ট করে দেব রেবতীকে। তাতে তে পিসির আপত্তি হতে পারবে না ?” :

“মেয়েদের আপত্তির যুক্তি যদি ধরতেই পারব তা হলে পুরুষ হয়ে জন্মাতে গেলুম কেন। কিন্তু একটা কথা বুঝতে পারছি নে, ওকে যদি জামাই না করবে তা হলে প্রেসিডেণ্ট করতে চাও কেন।” ~ “শুধু যন্ত্রগুলো নিয়ে কী হবে। মানুষ চাই ওদের প্রাণ দিতে আর-একটা কথা এই, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে একটাও নতুন যন্ত্র আনা হয় নি। টাকার অভাবে নয়। কিনতে হলে একটা লক্ষ্য ধরে কিনতে হয়। খবর জেনেছি, রেবতী ম্যাগ নেটিজম নিয়ে কাজ করছেন। সেই পথে সংগ্রহ এগিয়ে চলুক, যত দাম লাগে, লাগুক্-না।” 1 * “কী আর বলব, পুরুষমানুষ যদি হতে তোমাকে কাধে করে নিয়ে নেচে বেড়াতুম। তোমার স্বামী রেল-কোম্পানির টাকা চুরি করেছিলেন, তুমি চুরি করে নিয়েছ তার পুরুষের মনখান। এমন অদ্ভূত কলমের-জোড়-লাগানো বুদ্ধি আমি কখনও দেখি নি। আমারও পরামর্শ নেওয়া তুমি যে দরকার বোধ কর, এই আশ্চর্ষ।” “তার কারণ আপনি ষে খুব খাটি, ঠিক কথা বলতে জানেন।” * “হাসালে তুমি । তোমাকে বেঠিক কথা বলে ধরা পড়ব, এত বড়ো নিরেট বোকা আমি নই। তা হলে লাগা যাক এবার, জিনিসপত্র ফর্দ করা, দরশাচাই করা, ভালে৷ উকিল ডেকে তোমার স্বত্ব বিচার করা, আইনকানুন বেঁধে দেওয়া ইত্যাদি অনেক হাঙ্গামা আছে।” . “ এসব দায় কিন্তু আপনারই।” “সেটা হবে নামমাত্র। বেশ ভালো করেই জান, যা তুমি বলবে তাই বলব, ষা করবে তাই করব। আমার লাভটা এই যে ছবেলা দেখা হৰে তোমার সঙ্গে। তোমাকে যে কী চক্ষে দেখেছি তুমি তো জান না।” . লোহিনী চৌকি থেকে উঠে এসে ধ। করে এক হাতে চৌধুরীর গলা জড়িয়ে ধরে