পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

डिन नत्रौ હર ইতিমধ্যে একটা ঘটনা ঘটল সেটা উল্লেখযোগ্য। দিনের আলো প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। অচিরার সময় হয়েছে ঘরে ফেরবার। এমন সময় একটা হিন্দুস্থানী গোয়ার এসে তার হাত থেকে তার খাতা আর থলিটা নিয়ে যখন ছুটেছে আমি তখনই বনের জাড়াল থেকে বেরিয়ে এসে বললুম, “কোনো ভয় নেই আপনার ” এই বলে ছুটে সেই লোকটার ঘাড়ের উপর পড়তেই সে ব্যাগ খাত ফেলে দৌড় মারলে। আমি লুঠের মাল নিয়ে এসে অচিরাকে দিলুম। অচিরা বললে, “ভাগ্যিস আপনি—” • আমি বললেম, “আমার কথা বলবেন না, ভাগ্যিস ঐ লোকট এসেছিল।” “তার মানে!” “তার মানে তারই কৃপায় আপনার সঙ্গে আমার প্রথম আলাপ হয়ে গেল।” অচিরা বিস্মিত হয়ে বললে, “কিন্তু ও যে ডাকাত।” “এমন অন্যায় অপবাদ দেবেন না। ও আমার বরকন্দাজ, রামশরণ।” অচিরা মুখের উপর খয়েরি রঙের আঁচল টেনে নিয়ে খিলখিল করে হেসে উঠল। হাসি থামতে চায় না। কী মিষ্টি তার ধ্বনি যেন ঝরনার নিচে মুড়িগুলো ঠুনঠুন করে উঠ স্বরে স্বরে। হাসি-অবসানে সে বললে, “কিন্তু সত্যি হলে খুব মজা হত।” “মজা কার পক্ষে ?” “ষাকে নিয়ে ডাকাতি ।” “আর উদ্ধারকর্তার ?” # : “বাড়ি নিয়ে গিয়ে তাকে এক পেয়াল চা খাইয়ে দিতুম আর গোটা দুয়েক স্বদেশী विश्रृं ।” _; “আর এই ফাকি উদ্ধারকর্তার কী হবে ।” “যে রকম শোনা গেল তার তো আর-কিছুতে দরকার নেই, কেবল প্রথম কথাটা ।” “ঐ প্রথম পদক্ষেপেই গণিতের অগ্রগতিটা কি বন্ধ হবে।” f “কেন হবে । ওকে চালাবার জন্যে বরকন্দাজের সাহাষ্য দরকার হবে না।” বসলুম সেখানেই ঘাসের উপরে। একটা কাটা গাছের গুড়ির উপরে বসে ছিল অচিরা। আমি জিজ্ঞাসা করলুম, “আপনি হলে আমাকে প্রথম কথাটা কী বলতেন।” “বলতুম, রাস্তায় ঘাটে দেল কুড়িয়ে কুড়িয়ে করছেন কী। আপনার কি বয়স হয় নি।”