পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৌকাডুবি やbrQ উমেশ । সেই ষে তুমি আমাকে পাচটা টাকা দিয়াছিলে, সে তো আমার খরচ হয় बांद्दे । বলিয়া গাট হইতে পাচটা টাকা বাহির করিয়া দেখাইল । কমলা। তবে চল উমেশ, আমরা কাশী যাই, কী বলিস ? তুই তো টিকিট করিতে পারিবি ? * উমেশ কহিল, “পারিব।” বলিয়া তখনি টিকিট কিনিয়া আনিল । গাড়ি প্রস্তুত ছিল, গাড়িতে কমলাকে উঠাইয়া দিল ; কহিল, “মা, আমি পাশের কামরাতেই রহিলাম।” কাশী স্টেশনে নামিয়া কমলা উমেশকে জিজ্ঞাসা করিল, “উমেশ, এখন কোথায় যাই বল দেখি ?” উমেশ কহিল, “ম, তুমি কিছুই ভাবিয়ে না ; আমি তোমাকে ঠিক জায়গায় লইয়া যাইতেছি।” কমলা। ঠিক জায়গা কী রে! তুই এখানকার কী জানিস বল দেখি । উমেশ কহিল, “সব জানি । দেখো তো কোথায় লইয়া যাই ।” বলিয়া কমলাকে একটা ভাড়াটে গাড়িতে তুলিয়া দিয়া সে কোচবাক্সে চড়িয়া বসিল । একটা বাড়ির সামনে গাড়ি দাড়াইলে উমেশ কহিল, “মা, এইখানে নামে গ কমলা গাড়ি হইতে নামিয়া উমেশের অনুসরণ করিয়া বাড়িতে প্রবেশ করিতেই উমেশ ডাকিয়া উঠিল, "দাদামশায়, বাড়ি আছ তো ?” পাশের একটা ঘর হইতে সাড়া আসিল, “কে ও উমশে না কি ! তুই কোথা থেকে এলি ?” পরক্ষণেই হুক-হাতে স্বয়ং চক্রবর্তী-খুড়া আসিয়া উপস্থিত। উমেশ সমস্ত মুখ পরিপূর্ণ করিয়া নীরবে হাসিতে লাগিল। বিস্মিত কমলা ভূমিষ্ঠ হইয়া চক্রবর্তীকে প্রণাম কারল । খুড়ার খানিক ক্ষণ মুখে আর কথা সরিল না ; তিনি কী ষে বলিবেন, হু কাটা কোনখানে রাখিবেন, কিছুই ভাবিয়া পাইলেন না। অবশেষে কমলার চিবুক ধরিয়া তাহার লজ্জিত নতমুখ একটুখানি উঠাইয়া কহিলেন, “মা আমার ফিরে এল ! চলে চলো, উপরে চলে ।” "ও শৈল, শৈল ! দেখে যা, কে এসেছে।” : শৈলজা তাড়াতাড়ি ঘর হইতে বাহির হইয়া বারান্দায় সিড়ির সম্মুখে আসিয়া দাড়াইল। কমলা তাহার পায়ের ধুলা লইয়া প্রণাম করিল। শৈল তাড়াতাড়ি তাহাকে বুকে চাপিয়া ধরিয়া তাহার ললাট চুম্বন করিল। চোখের জলে দুই কপোল