পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

te$ ब्रदौट-ब्रध्नोबलौ সখীবিরহিত শকুন্তলা এতই সুস্পষ্টরূপে, অসহায় অসম্পূর্ণ অনাবৃত ভাবে চোখে পড়ে যে, তাহার দিকে যেন ভালো করিয়া চাহিতে সংকোচ বোধ হয়— মাঝখানে আর্য গৌতমীর আকস্মিক আবির্ভাবে পাঠকমাত্রেই মনে মনে আরাম লাভ করে। আমি তো মনে করি, রাজসভায় দুষ্মন্ত শকুন্তলাকে যে চিনিতে পারেন নাই তাহার প্রধান কারণ, সঙ্গে অনস্বয়া-প্রিয়ংবদা ছিল না। একে তপোবনের বাহিরে, তাহাতে খণ্ডিত শকুন্তলা, চেনা কঠিন হইতে পারে। শকুন্তলা বিদায় লইলেন, তাহার পরে সখীরা যখন শূন্ত তপোবনে ফিরিয়া আসিল তখন কি তাহদের শৈশবসহচরীর বিরহই তাহদের একমাত্র দুঃখ ? শকুন্তলার অভাব ছাড়া ইতিমধ্যে তপোবনের আর কি কোনো পরিবর্তন হয় নাই ? হায়, তাহারা জ্ঞানবৃক্ষের ফল খাইয়াছে, যাহা জানিত না তাহা জানিয়াছে। কাব্যের কাল্পনিক নায়িকার বিবরণ পড়িয়া নহে, তাহদের প্রিয়তমা সর্থীর বিদীর্ণ হৃদয়ের মধ্যে অবতরণ করিয়া। এখন হইতে অপরাহ্লে আলবালে জলসেচন করিতে কি তাহারা মাঝে মাঝে বিস্তৃত হইবে না ? এখন কি তাহারা মাঝে মাঝে পত্রমর্মরে সচকিত হইয়া অশোকতরুর অন্তরালে প্রচ্ছন্ন কোনো আগন্তুকের আশঙ্কা করিবে না ? মৃগশিশু আর কি তাহদের পরিপূর্ণ আদর পাইবে ? এখন সেই সখীভাবনিরমুক্ত স্বতন্ত্রা অনস্বয় এবং প্রিয়ংবদাকে মর্মরিত তপোবনে তাহাদের নিজের জীবনকাহিনীস্থত্রে অন্বেষণ করিয়া ফিরিতেছি। তাহারা তো ছায়া নহে ; শকুন্তলার সঙ্গে সঙ্গে তাহারা এক দিগস্ত হইতে অন্য দিগন্তে অন্ত যায় নাই তো। তাহারা জীবন্ত, মূর্তিমতী। রচিত কাব্যের বহির্দেশে, অনভিনীত নাট্যের নেপথ্যে এখন তাহারা বাড়িয়া উঠিয়াছে— অতিপিনদ্ধ বন্ধলে এখন তাহদের যৌবনকে আর বঁাধিয়া রাখিতে পারিতেছে না— এখন তাহাদের কলহাস্তের উপর অন্তৰ্ঘন ভাবের আবেগ নববর্ষার প্রথম মেঘমালার মতে অশ্রুগম্ভীর ছায়া ফেলিয়াছে। এখন এক-এক দিন সেই অন্তমনস্কাদের উটজপ্রাঙ্গণ হইতে অতিথি আসিয়া ফিরিয়া যায়। আমরাও ফিরিয়া আসিলাম । * সংস্কৃত-সাহিত্যে আর-একটি অনাদৃত আছে। তাহার সহিত পাঠকদের পরিচয় সাধন করাইতে আমি কুষ্ঠিত। সে বড়ো কেহই নহে, সে কাদম্বরী কাহিনীর পত্ৰলেখা। সে যেখানে আসিয়া অতি স্বল্প স্থানে আশ্রয় লইয়াছে সেখানে তাহার আসিবার কোনোপ্রকার প্রয়োজন ছিল না। স্থানটি তাহার পক্ষে বড়ো সংকীর্ণ একটু এ-দিকে ও-দিকে পা ফেলিলেই সংকট । | এই আখ্যায়িকায় পত্ৰলেখা ৰে স্বকুমার লম্বন্ধসূত্রে আবদ্ধ হইয়া আছে সেরূপ