পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

byr SSR O রবীন্দ্র-রচনাবলী शद्धऊक्र°° প্রবাসী । মাঘ ১৩১৪ দেশহিত বঙ্গদর্শন । আশ্বিন ১৩১৫ স্বদেশী আন্দোলনের কোনো-এক পর্বে যখন দেশ মতানৈক্য প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল তখন “দেশনায়ক প্রবন্ধে (১৫ বৈশাখ ১৩১৩ তারিখে পশুপতিনাথ বসুর সীেধপ্রাঙ্গণে আহুত মহাসভায় পঠিত) রবীন্দ্রনাথ “দেশের সমস্ত উদ্যমকে বিক্ষেপের ব্যর্থতা হইতে একের দিকে ফিরাইয়া আনিবার একমাত্র উপায়” রূপে “কোনো এক জনকে আমাদের অধিনায়ক বলিয়া স্বীকার করিবার প্রস্তাব করেন,** এবং সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে “সকলে মিলিয়া প্রকাশ্যভাবে দেশনায়করূপে বরণ করিয়া লইবার জন্য সমস্ত বঙ্গবাসীকে আহবান করেন । গ্রন্থে বর্জিত প্রবন্ধের ঐ অংশে রবীন্দ্রনাথ বলেন- ।

    • অল্পকাল পূর্বে বাংলাদেশে স্বদেশী আন্দােলনের যখন প্রথম জোয়ার আসিয়াছিল তখন ছাত্রদের মুখে এবং চারিদিকে নেতা” “নেতা” “নেতা” রব উঠিয়াছিল। তখন এই নেতৃহীন দেশে অকস্মাৎ নেতা এতই অদ্ভুত সুলভ হইয়াছিল যে, আমাদের মতো সাহিত্যরসবিহবল অকৰ্মণ্য লোকেরও নেতা হইবার সাংঘাতিক ফাড়া নিতান্তই অল্পের উপর দিয়া কাটিয়াছে। শান্তিপ্রিয় ভদ্রলোকদের তখন এমনি বিপদের দিন গেছে যে, “আমি নেতা নাই বলিয়া গলায় চাদর দিলেও

হইয়াছে । হঠাৎ সমস্ত দেশের এইরূপ উৎকট নেতা'-বায়ুগ্ৰস্ত হইবার কারণ এই যে, কাজের হাওয়া দিবামাত্ৰই স্বভাবের নিয়মে সাব-প্ৰথমে নেতাকে ডাক পড়িবেই। সেই ডাকে প্রথম ধাক্কায় বাজারে ছোটাে-বড়ো কুঁটা-খাটি বহুবিধ নেতার আমদানি হয় এবং লোকের প্রাণের গরজে বিচার করিবার সময় পায় না— নেতা লইয়া টানাটানি-কাঁড়াকড়ি করিতে থাকে। ইহাতে করিয়া অনেক মিথ্যার, অনেক কৃত্রিমতার সৃষ্টি হয়, কিন্তু ইহার মধ্যে আসল সত্যটুকু এই যে, আমাদের নিতান্তই নেতা চাই- নহিলে আমাদের আশা-উদ্যম-আকাঙক্ষা সমস্ত ব্যর্থ হইয়া যাইতেছে । যাহা হউক, একদিন যখন নেতাকে ডাকি নাই, কেবল বক্তৃতাসভার সভাপতিকে খুজিয়াছিলাম, সেদিন গেছে ; তার পরে একদিন যখন 'নেতা নেতা’ করিয়া উন্মত্ত হইয়া উঠিয়াছিলাম সেদিনও আজ নাই ; অতএব আজ অপেক্ষাকৃত স্থিরচিত্তে আমাদের একজন দেশনায়ক বরণ করিয়া লইবার প্রস্তাব পুনর্বার সর্বসমক্ষে উত্থাপন করিবার সময় হইয়াছে বলিয়া অনুভব করিতেছি । এ সম্বন্ধে আজ কেবল যে আমাদের বোধশক্তি পরিষ্কার হইয়াছে তাহা নহে, আমাদের ক্ষেত্ৰ প্ৰস্তুত হইয়াছে এবং দেশের হৃদয় নানা আন্দোলনের ও নানা পরিভ্রমণের পরেও অবশেষে যাহাকে নেতা বলিয়া স্বীকার করিতে চাহে তাহার পরিচয় অদ্য যেন পরিস্ফুটতর হইয়া উঠিয়াছে। আমি জানি এই সভাস্থলে দেশনায়ক বলিয়া আমি র্যাহার নাম লইতে উদ্যত হইয়াছি, তাহার নাম আজ কেবল বাংলাদেশে নহে, ভারতবর্ষের সর্বত্র ধ্বনিত হইয়া উঠিয়াছে। আমি জানি, আজ বঙ্গলক্ষ্মী যদি স্বয়ম্বরা হইতেন তবে তাঁহারই কণ্ঠে বরমাল্য পড়িত। ব্ৰাহ্মণের ধৈর্য ও ক্ষত্ৰিয়ের তেজ যাহাতে একত্রে মিলিত, যিনি সরস্বতীর নিকট হইতে বাণী পাইয়াছেন এবং যাহার অক্লান্ত কর্মপটুতা স্বয়ং বিশ্বলক্ষ্মীর দান-আজ বাংলাদেশের দুর্যোগের দিনে র্যাহারা ৪০। সুরাট কনগ্রেসে বিসংবাদের পরে লিখিত । ৪১ তুলনীয় ‘স্বদেশী সমাজ প্রবন্ধে সমাজপতি-নিয়ােগের প্রস্তাব। দ্র, রবীন্দ্র-রচনাবলী তৃতীয় খণ্ড (मूलख्छ डीिग्र) । ৪২ পৃ ৬৯৪, ২৮ ছত্রের পর ।