পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ιη ο রবীন্দ্র-রচনাবলী মাঝে মাঝে দেখা দেয়, কিন্তু দেখা দিয়েছে বলেই যে টিকে যায় তা নয় সম্পূর্ণ স্বষ্টির সঙ্গে সামঞ্জস্য হয় না বলেই তাদের জবাব দেওয়া হয়। সেইরকম জবাব-দেওয়া লাঞ্ছনধারী রচনা অনেকগুলিই পাওয়ু যাবে এই গ্রন্থের শুরু থেকেই, তাদের ভিড় ঠেলে পাঠকেরা আপন চেষ্টায় যদি পথ করে চলে যান তবে তাদের প্রতি সদ্ব্যবহার করা হবে। প্রথম বুনোনির সময় যে মাটি বৃষ্টি পায়নি, তার তৃষার্ত পীড়িত বীজ থেকে কুঞ্চিত হয়ে যে অঙ্কুর বেরোয় সে যেমন কিছু একটা প্রকাশ করতে চায় কিন্তু তার পূর্বেই ব্যর্থ হয়ে যায় মরে, সন্ধ্যাসংগীতের কবিতা সেই জাতের। একে সংগ্রহ করে রাখবার মূল্য নেই। এর কেবল একটা দাম আছে, সে হচ্ছে চিত্তচাঞ্চল্যের আবেগে বাধা ছন্দের শিকল ভাঙা । অনেক দিনের রচনাগুলো যখন একত্র জমা করা যায় তখন এই ভাবনাটা মনে আসে। তারা নানা বয়সের ও মনের নানা অবস্থার সামগ্রী । শুধু নিজের মনের নয়, চারি দিকের মনের। ইতিহাসের এই অনিবার্য বৈচিত্র্যের ভিতর দিয়েই সাহিত্যের তরী চলে আপন তীর্থে। সকলের চেয়ে ভেদ ঘটায় রচনাশক্তির কমিবেশিতে। এক সময়ে বিশেষ রসের আয়োজনে মনকে যা টেনেছিল, আর-এক সময়ে তা টানে না, কিংবা অন্য রকম করে টানে। তাতে কোনো ক্ষতি হয় না যদি তার তৎকালীন প্রকাশষ্ট হয় সম্পূর্ণ জোরের সঙ্গে। অনেক সময়ে সেইটেই হয় না। আমরা যাকে বলি ছেলেমামুষি, কাব্যের বিষয় হিসাবে সেটা অতি উত্তম, রচনার রীতি হিসাবে সেটা উপেক্ষার যোগ্য । বয়সের এক পর্বে যা লিখেছি অন্ত পর্বে তা লিখিনে কিংবা হয়তো অন্য রকম করে লিখি । সেই তার রূপ ও রসের পরিবর্তন যদি যথাসময়ে আপন প্রকাশরীতির যোগ্য বাহন পেয়ে থাকে তা হলে কোনো নালিশ থাকে না । যুগপরিবর্তন ইতিহাসের অঙ্গ, কিন্তু সাহিত্যেব একটা মূলনীতি সকল পরিবর্তনের ভিতর দিয়ে মানুষের মনকে আনন্দের জোগান দিয়ে থাকে, সেটা হচ্ছে আমাদের অলংকার শাস্ত্রে যাকে বলে রসতত্ত্ব। এই রস আধুনিকী বা সনাতনী কোনো