পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (প্রথম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o “ . . * ..."

ι + 4ళ్ళి " , রবীন্দ্র-রচনাবলী,

然 i হাড়ে খুলে প্রবেশ করেছিল। স্নান করার পর আলেকজান্দ্ৰিয় শহর দেখতে । গেলেম । জাহাজ থেকে ভাঙা পৰ্যন্ত বাবার জন্ধে একটা নোঁকে ভাড় হল । । এখানকার এক-একটা মাঝি সার উইলিম জোনসের দ্বিতীয় সংস্করণ বললেই হয় । । তারা গ্ৰীক, ইটালিয়ান, ফ্রেঞ্চ, ইংরেজি প্রভৃতি অনেক ভাষায় চলনসই রকম কথা । কইতে পারে। শুনলেম ফ্রেঞ্চ ভাষাই এখানকার সাধারণ ভাষা। রাস্তাঘাটের নাম, সাইনবোর্ডে দোকানগুলির আত্মপরিচয়, অধিকাংশই ফরাসি ভাষায় লেখা । আলেকজাঞ্জিয়া শহরটি সমৃদ্ধিশালী মনে হল । এখানে যে কত জাতের লোক ও কক্ত জাতের দোকানবাজার আছে তার ঠিকানা নেই। রাস্তাগুলি পাথর দিয়ে বাধানে, । তাতে বেশ পরিষ্কার থাকে, কিন্তু গাড়ির শব্দ বড়ো বেশি রকম হয় । খুব বড়ো বড়ো বাড়ি, বড়ে বড়ে দোকান, শহরটি খুব জমকালো বটে। আলেকজান্দ্রিয়ার বন্দর খুব প্রকাও । বিস্তর জাহাজ এখানে আশ্রয় পায় । যুরোপীয়, মুসলমান, সকল প্রকার জাতিরই জাহাজ এ বন্দরে আছে, কেবল হিন্দুদের জাহাজ নেই , চার-পাচ দিনে আমরা ইটালিতে গিয়ে পৌছলেম। তখন রাত্রি একটা-দুটো হবে। গরম বিছানা ত্যাগ করে, জিনিসপত্র নিয়ে আমরা জাহাজের ছাতে গিয়ে উঠলেম। জ্যোৎস্নারাত্রি, খুব শীত ; আমার গায়ে বড়ো একটা গরম কাপড় ছিল না, তাই ভারি শীত করছিল। আমাদের মুমুখে নিস্তব্ধ শহর, বাড়িগুলির জানলা দরজা সমস্ত বন্ধ- সমস্ত নিদ্রামগ্ন। আমাদের যাত্রীদের মধ্যে ভারি গোল পড়ে গেল, কখনো শুনি ট্রেন পাওয়া বাবে, কখনো শুনি পাওয়া যাবে না। জিনিসপত্রগুলো নিয়ে কী করা যাবে ভেবে পাওয়া যায় না, জাহাজে থাকব কি বেরোব কিছুই স্থির নেই । একজন ইটালিয়ান অফিসার এসে আমাদের গুনতে আরম্ভ করলে—কিন্তু কেন গুনতে আরম্ভ করলে তা ভেবে পাওয়া গেল না । জাহাজের মধ্যে এইরকম একটা অক্ষুট জনশ্রুতি প্রচারিত হল যে, এই গণনার সঙ্গে আমাদের ট্রেনে চড়ার একটা বিশেষ যোগ আছে। কিন্তু সে-রাত্রে মূলেই ট্রেন পাওয়া গেল না। শোনা গেল, তার পরদিন ৰেল তিনটের আগে ট্রেন পাওয়া বাবে না। যাত্রীরা মহা বিরক্ত হয়ে উঠল । অবশেষে সে-রাত্রে ব্রিদিসির হোটেলে আশ্রয় নিতে হল। k এই তো প্রথম যুরোপের মাটিতে আমার পা পড়ল। কোনো নূতন দেশে আসবার আগে আমি তাকে এমন নূতনতর মনে করে রাখি যে, এসে আর তা নূতন বলে মনেই হয় না। যুরোপ আমার তেমন নূতন মনে হয় নি শুনে সকলেই অবাক । আমরা বৃত্রি তিনটের সময় ব্রিদিমির হোটেলে গিয়ে শুয়ে পড়লেম। সকালে একটা আধমরা ঘোড়া ও আধভাঞ্জ গাড়ি চড়ে শহর দেখতে বের হলেম। সারণির