পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পত্রপুট Sసి অগোচরের অপরূপ প্রকাশ ; তার লঘু গন্ধ ছড়িয়ে পড়ল আকাশে ; অপ্রাপণীয়ের সে দীর্ঘনিশ্বাস, দুরূহ তুরাশার সে অনুচ্চারিত ভাষা । একদা মৃত্যুশোকের বেদমন্ত্র তুলে ধরেছে বিশ্বের আবরণ, বলেছে— পৃথিবীর ধূলি মধুময় । সেই স্বরে আমার মন বললে— সংগীতময় ধরার ধূলি। অামার মন বললে— মৃত্যু, ওগো মধুময় মৃত্যু, তুমি আমায় নিয়ে চলেছ লোকাস্তরে গানের পণখায় । অামি ওকে দেখলেম, যেন নিকষবরন ঘাটে সন্ধ্যার কালো জলে অরুণবরন পা-দুখানি ডুবিয়ে বসে আছে অপারী, অকুল সরোবরে স্বরের ঢেউ উঠেছে মুহূমুদু, আমার বুকের র্কাপনে কঁপিন-লাগা হাওয়া ওকে স্পশ করছে ঘিরে ঘিরে । অামি ওকে দেখলেম, যেন আলো-নেবা বাসরঘরে নববধূ, আসন্ন প্রত্যাশার নিবিড়তায় দেহের সমস্ত শিরা স্পন্দিত । আকাশে ধ্রুবতারার অনিমেষ দৃষ্টি, বাতাসে সাহান রাগিণীর করুণা। অামি ওকে দেখলেম, ও যেন ফিরে গিয়েছে পূর্বজন্মে চেনা-অচেনার অস্পষ্টতায় ।