পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8) o রবীন্দ্র-রচনাবলী সব সাঁচ মিলৈ সে সাচ হৈ না মিলৈ সে বঠ। * I 哆 জন রজব সাচী কহী ভাবই রিবি ভাবই রূঠ : , , সব সত্যের সঙ্গে যা মেলে তাই সত্য, যা মিলল না তা মিথ্যে ; রজ্জব:বলছে, এই কথাই খাটি, এতে তুমি খুশিই হও আর রাগই কর। ভাষা থেকে বোঝা যাচ্ছে, রজব বুঝেছেন, এ কথায় রাগ করবার লোকই সমাজে বিস্তর। তাদের মত ও প্রথার সঙ্গে বিশ্বসত্যের মিল হচ্ছে না, তবু তারা তাকে সত্য নাম দিয়ে জটিলতায় জড়িয়ে থাকে— মিল নেই বলেই এই নিয়ে তাদের উত্তেজনা উগ্রতা এত বেশি। রাগারগির দ্বারা সত্যের প্রতিবাদ, অগ্নিশিখাকে ছুর দিয়ে বেধবার চেষ্টার মতো। সেই চুরী সত্যকে মারতে পারে না, মারে মানুষকে। তবু সেই বিভীষিকার সামনে দাড়িয়েই বলতে হবে— সব সাচ মিলৈ সোসাচ হৈ না মিলৈ সো বঁঠ। .. একদা যেদিন কোনে-একজন মাত্র বৈজ্ঞানিক বললেন, পৃথিবী স্বর্ষের চার দিকে ঘুরছে, সেদিন সেই একজন মাত্র মাস্থ্যই বিশ্বমাহুষের বুদ্ধিকে প্রকাশ করেছেন। সেদিন লক্ষ লক্ষ লোক সে কথায় ক্রুদ্ধ ; তারা ভয় দেখিয়ে জোর করে বলাতে চেয়েছে, স্বৰ্যই পৃথিবীর চার দিকে ঘুরছে। তাদের সংখ্যা যতই বেশি হোক, তাদের গায়ের জোর যতই থাক, তবু তারা প্রজ্ঞাকে অস্বীকার করবামাত্র চিরকালের মানবকে অস্বীকার করলে । সেদিন অসংখ্য বিরুদ্ধবাদীর মাঝখানে একলা দাড়িয়ে কে বলতে পেরেছে সোহহং, অর্থাৎ, আমার জ্ঞান আর মানবভূমার জ্ঞান এক । তিনিই বলেছেন যাকে সেদিন বিপুল জনসংঘ সত্য প্রত্যাখ্যান করাবার জন্যে প্রাণাস্তিক পীড়ন করেছিল। যদি লক্ষ লক্ষ লোক বলে, কোটি যোজন দূরে কোনো বিশেষ গ্রহনক্ষত্রের সমবায়ে পৃথিবীর কোনো-একটি প্রদেশের জলধারায় এমন অভৌতিক জাদুশক্তির সঞ্চার হয় যাতে স্নানকারীর নিজের ও পূর্বপুরুষের আন্তরিক পাপ যায় ধুয়ে, তা হলে বলতেই হবে— * সব সাচ মিলৈ সে সাচ হৈ না মিলৈ সো বঁঠ। বিশ্বের বুদ্ধি এ বুদ্ধির সঙ্গে মিলল না। কিন্তু যেখানে বলা হয়েছে, অদ্ভিৰ্গাত্রাণি শুধ্যস্তি মন: সত্যেন শুধ্যতি— জল দিয়ে কেবল দেহেরই শোধন হয়, মনের শোধন হয় সত্যে, সেখানে বিশ্বমানবমনের সম্মতি পাওয়া যায়। কিংবা যেখানে বলা হয়েছে— কৃত্বা পাপং হি সম্ভপ্য তস্মাৎ পাপাং প্লমুচ্যতে। নৈবং কুর্ষাম পুনরিতি নিবৃত্তা পূরতে তু স: | 黜 পাপ করে সস্তপ্ত হলে সেই সন্তাপ থেকেই পাপের মোচন হয়, এমন কাজ আর করব