পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী صراع لا কেবল অভিরামের তুলি সেদিন চলল না। . নতুন রাজমন্ত্রী, এই তো সেই কুড়িয়ে-পাওয়া ছেলে, যাকে অভিরামের বাপ মানুষ করে নিজের ছেলের চেয়ে বেশি বিশ্বাস করেছিল । সেই বিশ্বাস হল সিধকাঠি, তাই দিয়ে বুড়োর সর্বস্ব সে হরণ করলে। সেই এল দেশের রাজমন্ত্রী হয়ে। যে ঘরে অভিরাম পট আঁকে সেই তার ঠাকুরঘর ; সেখানে গিয়ে হাত জোড় করে বললে, “এই জন্তেই কি এতকাল রেখায় রেখায় রঙে রঙে তোমাকে স্মরণ করে এলেম । এত দিনে বর দিলে কি এই অপমান ।” এমন সময় রথের মেলা বসল। সেদিন নানা দেশের নানা লোক তার পট কিনতে এল, সেই ভিড়ের মধ্যে এল একটি ছেলে, তার আগে পিছে লোক-লশকর। সে একটি পট বেছে নিয়ে বললে, “আমি কিনব।” অভিরাম তার নফরকে জিজ্ঞাসা করলে, "ছেলেটি কে ৷” সে বললে, “আমাদের রাজমন্ত্রীর একমাত্র ছেলে ।” অভিরাম তার পটের উপর কাপড় চাপা দিয়ে বললে, “বেচব না।” শুনে ছেলের আবদার আরও বেড়ে উঠল। বাড়িতে এসে সে খায় না, মুখ ভার করে থাকে । o অভিরামকে মন্ত্রী থলিভরা মোহর পাঠিয়ে দিলে ; মোহরভরা থলি মন্ত্রীর কাছে ফিরে এল । মন্ত্রী মনে মনে বললে, “এত বড়ো স্পর্ধা !” অভিরামের উপর যতই উৎপাত হতে লাগল ততই সে মনে মনে বললে, “এই আমার জিত ।” vථ প্রতিদিন প্রথম সকালেই অভিরাম তার ইষ্টদেবতার একখানি করে ছবি অঁাকে । এই তার পূজা, আর কোনো পূজা সে জানে না। একদিন দেখলে, ছবি তার মনের মতো হয় না। কী যেন বদল হয়ে গেছে । কিছুতে তার ভালো লাগে না । তাকে যেন মনে মনে মারে । দিনে দিনে সেই সূক্ষ্ম বদল স্থল হয়ে উঠতে লাগল । একদিন ཅི།༨ চমকে উঠে বললে, “বুঝতে পেরেছি।”