পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে २२¢ ধরা পড়ে গেল মিথ্যে । পণ্ডিতজি বললে, নখে তো রক্তের চিহ্ন দেখি নে ; মুখ শুকে বললে, মুখে তে রক্তের গন্ধ নেই। সবাই বলে উঠল, ছি ছি! এ তো রক্তও নয়, পিত্তও নয়, মগজও নয়, মজাও নয়— নিশ্চয় মামুষের পাড়ায় গিয়ে এমন একটা রক্ত খেয়েছে বা নিরামিষ রক্ত, বা অশুচি । পঞ্চায়েত বলে গেল। কামড়বিশারদ-মশায় হুঙ্কার দিয়ে বললে, প্রায়শ্চিত্ত করা চাই। করতেই झल । যদি না করত । সর্বনাশ ! ও যে পাচ-পাঁচটা মেয়ের বাপ ; বড়ো বড়ো খরনখিনীর গৌরীদানের বয়স হয়ে এসেছে । পেটের নীচে লেজ গুটিয়ে সাত গণ্ডা মোষ পণ দিতে চাইলেও বর জুটবে না । এর চেয়েও ভয়ংকর শাস্তি আছে। কী রকম । ম’লে শ্রাদ্ধ করবার জন্তে পুঙ্কত পাওয়া যাবে না, শেষ কালে হয়তো বেতজঙ্গল গা থেকে নেকড়ে-বেঘো পুরুত আনতে হবে ; সে ভারি লজ্জা, সাত পুরুষের মাথা হেট । শ্ৰাদ্ধ নাই বা হল । শোনো একবার । বাঘের ভূত যে না খেয়ে মরবে । লে তো মরেইছে, আবার মরবে কী ক'রে । সেই তো আরও বিপদ । না খেয়ে মরা ভালো, কিন্তু ম'রে না খেয়ে বেঁচে থাকা ষে বিষম দুরগ্রহ । পুপুদিদিকে ভাবিয়ে দিলে। খানিকক্ষণ বাদে ভুরু কুঁচকিয়ে বললে, ইংরেজের ভূত তা হলে খেতে পায় কী ক’রে । তারা বেঁচে থাকতে যা খেয়েছে তাতেই তাদের সাত জন্ম অমনি চলে যায় । আমরা যা খাই তাতে বৈতরণী পার হবার অনেক আগেই পেট চো-চো করতে থাকে । সন্দেহ মীমাংসা হতেই পূপে জিগেল করলে, প্রায়শ্চিত্ত কিরকম হল। আমি বললুম, হাকবিজ্ঞা-বাচস্পতি বিধান দিলে যে, বাঘাচণ্ডীতলার দক্ষিণপশ্চিম কোণে কৃষ্ণপঞ্চমী তিথি থেকে শুরু করে অমাবস্তার আড়াই পন্থর রাত পৰম্ভ ওকে কেবল খ্যাক্শেয়ালির ঘাড়ের মাংস খেয়ে থাকতে হবে ; তাও হয় ওর পিসতুতো বোন কিম্বা মাসতুতো গুলোর মেজো ছেলে ছাড়া আর কেউ শিকার করলে হবে না— জার, শুকে খেতে হৰে পিছনের ভান দিকের থাবা দিয়ে ছিক্ষে ছিড়ে । এত বড়ো শাস্তির