পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সে ९8७ তাই সহ করেছি সব। কিন্তু এবার যে উণ্টো হল । কেন কী হল বলোই-না । তবে শোনে । পুপুদিদি কাল গিয়েছিল সিনেমায়। মোটরে উঠতে যাচ্ছে, আমি পিছন থেকে এসে বললুম, দিদিমণি, তোমার গাড়িতে আমাকে তুলে নিয়ে যাও। তার পরে কী আর বলব দাদা, একেবারে হিস্টিরিয়া । কিরকম । 疇 * হাতে চোখ ঢেকে চেচিয়ে উঠে দিদি বললে, যাও যাও, গাজাখোরের গা চুরি ক’রে আমার গাড়িতে উঠতে পাবে না। চার দিক থেকে লোক এল ছুটে, আমাকে পুলিশে ধরে নিয়ে যায় আর-কি। জীবনে অনেক নিন্দে শুনেছি, কিন্তু এরকম ওরিজিন্তাল নিন্দে শুনি নি কখনো। গাজাখোরের গা চুরি করা! আমার অতিবড়ো প্রাণের বন্ধুও এমন নিন্দে আমার নামে রটায় নি। বাড়ি ফিরে এসে সমস্ত ব্যাপারটা শোনা গেল। এ তোমারই কীতি । আমারই তো বটে। কী করি বলে। তোমাকে নিয়ে আর কাহাতক গল্প বানাই । বয়স হয়ে গেছে, কলমটাকে যেন বাতে ধরল, পুপুদিদির ফরমাশ-মত অসম্ভব গল্প বলার হাল্কা চাল আর নেই কলমের । তাই এই শেষ গল্পটাতে তোমাকে একেবারে খতম করে দিয়েছি । খতম হতে রাজি নই, দাদা । দোহাই তোমার, পুপুদিদির ভয় ভাঙিয়ে দাও। বুঝিয়ে বলে, ওটা গল্প। Q বলেছিলুম, কিন্তু ভয় ভাঙতে চায় না। নাড়ীতে জড়িয়ে গেছে। উপায় না দেখে স্বয়ং সেই পাতু গেজেলকে আনলুম তার সামনে, উণ্টে হল ফল । পাতুর গা'খানা পরে যে তুমিই ঘুরে বেড়াচ্ছ তারই প্রমাণ প্রত্যক্ষ হয়ে গেল । তা হলে দাদা, গল্পটাকে উলটিয়ে দাও, ধনুষ্টঙ্কারে মরুক পাতু। গাজাখোরের গা’খানাকে নিমতলার ঘাটে পুড়িয়ে ফেলো। ঘটা ক'রে তার শ্রাদ্ধ করব, পুপুদিদিকে করব তাতে নেমস্তন্ন ; খরচ যত পড়ে দেব নিজের পকেট থেকে । আমি হলুম দিদির গল্পের বহুরূপী, হঠাৎ এত বড়ো পদ থেকে আমাকে অপদস্থ করলে বাচব না । আচ্ছা, গল্পের উন্টোরথে তোমাকে পুপুদিদির ঘরে আবার ফিরিয়ে আনব । পরদিন সন্ধ্যার সময় সে এল, আমি শুরু করলুম গল্পট – বললুম, পাতুর স্ত্রী স্বামীর স্বত্ব পাবার জন্তে তোমার নামে আদালতে নালিশ করেছে।