পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\O88 রবীন্দ্র-রচনাবলী মথুরবাবুর মুখের দিকে চেয়ে বললেন, কেমন মশায়, বুঝেছেন তো নিরংকরাল— একেবারে জলের মতো। ওর চেয়ে বেশি বুঝতে চাই নে— মুশকিল হবে। বাচস্পতি আবার ধরলেন, নিরংকরালের সহিত অজাতশত্রু অপরিপর্যস্মিত গগরায়ণকে পরমস্তি শয়নে সমুসদগারিত করিয়াছিল । এই পর্যন্ত ব’লে বাচস্পতি মশায় একবার সভাস্থ সকলের মুখের দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। বললেন, দেখুন একবার, সহজ কাকে বলে । অভিধানের প্রয়োজনই হয় না। সভার লোকেরা বললে, প্রয়োজন হলেই বা পাব কোথায় । বাচস্পতি মশায় একটু চোখ টিপে বললেন, ভাবখানা বুঝেছেন তো ? মথুরবাবু বললেন, বুঝেছি বই-কি । সমুদ্রগুপ্ত অজাতশক্রকে আচ্ছা করে পিটিয়ে দিয়েছিলেন । আহা, বাচস্পতি মশায়, লোকটাকে একেবারে সমুসদগারিত করে দিলে গো— একেবারে পরমস্তি শয়নে । বাচস্পতি বললেন, ছোটোলাট একবার এসেছিলেন আমাদের পাড়ার স্থলে বুটের ধুলো দিয়ে যেতে। তখন আমি তাকে এই বুগৰুলবুলি ভাষার একটা ইংরেজি তর্জমা শুনিয়েছিলুম। সভাস্থ সকলেই বললেন, ইংরেজিটা শোনা যাক । বাচস্পতি পড়ে গেলেন, দি হাব্বারকুয়াস ইনফ্যাচুফুয়েশন অব আকবর ডর্বেণ্ডিক্যালি ল্যাসেরটাইজটু দি গৰ্ব্যাণ্ডিজম্ অফ হুমায়ুন – শুনে ছোটোলাট একেবারে টরেটম্ বনে গিয়েছিলেন ; মুখ হয়েছিল চাপা হাসিতে ফুস্কায়িত। হেড পেডেণ্ডোর টিকির চার ধারে ভেরেগুম্‌ লেগে গেল, সেক্রেটারি চৌকি থেকে তড়তং করে উৎখিয়ে উঠলেন। ছেলেগুলোর উজবুমুখো ফুড়ফুড়োমি দেখে মনে হল, তারা যেন সব ফিরিচুথুসের একেবারে চিক্‌চাকস আমদানি । গতিক দেখে আমি চংচটকা দিলুম। সভাপতি বললেন, বাচস্পতি, এইখানেই ক্ষান্ত দাও হে, আর বেশিক্ষণ চললে পরাগগলিত হয়ে যাব। এখনি মাথাটার মধ্যে তাঙ্কিম মাঙ্কিম করছে। বাচস্পতি আর কিছুদিন বেঁচে থাকলে সভাপতির ভাষা এতদিনে ওঁদের মুখবুদবুদী শব্দে রঝম্ গৰম করে উঠত। 崙 弗 菁 যার যত নাম আছে সব গড়া-পেটা, যে নাম সহজে আসে দেওয়া যাক সেটা