পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য S. 86 গজরাজ তেজঃ ভুজে, অশ্বগতি পদে; } স্বৰ্ণরথ শিরঃ চুড়া; অঞ্চল পতাকা আদি বাক্য সিংহনাদ! শেল, শক্তি, জাটি, তোমর, ভোমর, শূল, মুষল, মুদগর, পটিশ, নারাচ, কীেত- শোভে দন্তরাপে! জনমিলা নয়নাগ্নি সাজোয়ার তেজে। পাঠকেরা বলুন দেখি এরূপ বর্ণনা সময়ে সময়ে হাস্যজনক হইয়া পড়ে কি না! যখন মেঘনাদ রথে উঠিতেছেন তখন প্রমীলা আসিয়া কঁাদিয়া কহিলেন, কোথায় প্ৰাণ সখে, রাখি এ দাসীরে, কহাে, চলিলা আপনি ? কেমনে ধরিবে প্ৰাণ তোমার বিরহে এ অভাগী ? হায়, নাথ, গহন কাননে, ব্রততী বাঁধিলে সাধে করি।-পদ, যদি তার রঙ্গরসে মনঃ না দিয়া মাতঙ্গ যায় চলি, তবু তারে রাখে পদাশ্রমে যুথনাথ। তবে কেন তুমি, গুণনিধি ত্যজ কিঙ্করীরে আজি? হৃদয় হইতে যে ভাব সহজে উৎসারিত উৎস-ধারার ন্যায় উচ্ছসিত হইয়া উঠে তাহার মধ্যে কৃত্রিমতা বাক্য-কৌশল প্রভৃতি থাকে না। প্রমীলার এই রঙ্গরসের” কথার মধ্যে গুণাপনা আছে, বাক্যচাতুরীও আছে বটে, কিন্তু হৃদয়ের উচ্ছাস নাই। যখন অক্রুর কৃষ্ণকে রথে লইতেছেন, তখন রাধা বলিতেছেন, রাধারে চরণে ত্যজিলে রাধানাথ, কী দোষ রাধারা পাইলে ? শ্যাম, ভেবে দেখো মনে, তোমারি কারণে ব্ৰজাঙ্গানাগণে উদাসী । নহি অন্য ভাব, শুন হে মাধব তোমারি প্রেমের প্রয়াসী। ঘোরতর নিশি, যথা বাজে বাঁশি, , তথা আসি গোপী সকলে, দিয়ে বিসর্জন কুল শীলে। এতেই হলাম দোষী, তাই তোমায় জিজ্ঞাসি এই দোষে কি হে ত্যজিলে ? শ্যাম, যাও মধুপুরী, নিষেধ না করি থাকো হরি যথা সুখ পাও। একবার, সহস্য বদনে বঙ্কিম নয়নে ব্ৰজগোপীর পানে ফিরে চাও। আর হেরিব আশা না করি। S. So