পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য 羲 。 S¢ዓ ভয়াকুল জীবকুল ধায় বায়ুবেগে প্ৰাণ লৈয়ে; দেব-নির ভস্ম যার বিষে; কেমনে পাঠাই তোরে সে সর্প বিবরে, প্ৰাণাধিক ? নাহি কাজ সীতায় উদ্ধারি। লক্ষ্মণ বুঝাইলেন যে, দেবতারা যখন আমাদের প্রতি সদয়, তখন কিসের ভয়। বিভীষণ কহিলেন যে, লঙ্কার রাজলক্ষ্মী তাহাকে স্বপ্নে কহিয়াছিলেন যে, তিনি শীঘ্রই প্ৰস্থান করিবেন, অতএব ভয় করিবার কোনো প্রয়োজন নাই। কিন্তু রাম কঁাদিয়া উঠিলেন এ ভ্রাতৃ-রতনে আমি এ অতল জলে ?” ইত্যাদি কিছুতেই কিছু হইল না, রামের ভয় কিছুতেই ঘুচিল না, অবশেষে আকাশবাণী হইল। উচিত কি তব, কহাে হে বৈদেহীপতি, সুতি দেবাকা, দেবকুলপ্রিয় p অবশেষে আকাশে চাহিয়া দেখিলেন যে অজগরের সহিত একটা মৰয় যুদ্ধ করিতেছে, কিন্তু যুদ্ধে অজগর জয়ী ও ময়ুর নিহত হইল। এতক্ষণে রাম শাস্ত হইলেন ও লক্ষ্মণকে যুদ্ধ-সজ্জায় সজ্জিত করিয়া দিলেন। লক্ষ্মণ যুদ্ধে যাইবার সময় রাম একবার দেবতার কাছে প্রার্থনা করিলেন, একবার বিভীষণকে কাতরভাবে কহিলেন, সাবধানে যাও মিত্র। অমূল রতনে রামের, ভিখারী রাম অপিছে তোমারে, রাখীবর! বিভীষণ কহিলেন, কোনো ভয় নাই। ইন্দ্ৰজিৎ-শোকে অধীর হইয়া যখন রাবণ সৈন্য-সজায় আদেশ দিলেন, তখন রাক্ষসসৈন্য-কোলাহল শুনিয়া রাম আপনার সৈন্যান্ধ্যক্ষগণকে ডাকাইয়া আনিলেন ও তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন ‘পুত্ৰশোকে আজি বিকল রাক্ষসপতি সাজিছে সত্বরে; রাখো গো রাঘবে আজি এ ঘোর বিপদে। স্ববন্ধু-বান্ধব-হীন বনবাসী আমি ভাগ্য-দোষে; তোমরা হে রামের ভরসা। বিক্রম, প্ৰতাপ, রণে।. কুল, মান, প্ৰাণ মোর রাখো হে উদ্ধারি রঘুবন্ধু, রঘুবধু বদ্ধ কারাগারে রক্ষা-ছলে । স্নেহ-পণে কিনিয়াছ রামে তোমরা বাঁধো হে আজি কৃতজ্ঞতাপাশে রঘুবংশে, দাক্ষিণাত্য দক্ষিণ্য প্ৰকাশি!” নীরবিলা, রঘুনাথ সজল নয়নে। এরূপ দুগ্ধপোষ্য বালকের ন্যায় কথায় কথায় সজল নয়নে বিষম। ভীরুস্বভাব রাম বনের