পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থসমালোচনা WeSR0 BDDD DBDD DDB DB DBDBL B DBDB BB BBD DDBB BDBDDBD BDB উচ্চতা অন্য দিকে আনন্দের গভীরতা উভয়ই সমানভাবে উপলব্ধি করিয়াছেন। আমাদের বাংলাদেশে শাক্ত বৈষ্ণবেরা ঈশ্বরের নৈকট্য অনুভবকালে তাহার দূরত্বকে একেবারে লোপ করিয়া দেয়, ভক্তিকে অন্ধভাবে উন্মুক্ত করিয়া দিবার কালে জ্ঞানকে অবমানিত করে; কিন্তু উপনিষদে এই উভয়ের অটল সামঞ্জস্য থাকতে তাহার মহাসমুদ্রের ন্যায় এমন অগাধ গান্তীর্য। এইজন্যই উপনিষদে সাধকের আত্মা কলনদিনী কুলপ্লাবিনী প্ৰমত্ততায় উচ্ছসিত না হইয়া নির্বক আত্মসমাহিত ভূমানন্দে প্রসারিত হইয়া গিয়াছে।” cीव ७७०s হাসি ও খেলা। শ্ৰীযোগীন্দ্রনাথ সরকার প্রণীত। মূল্য দশ আনা। বইখানি ছোটো ছেলেদের পড়িবার জন্য। বাংলা ভাষায় এরােপ গ্রন্থের বিশেষ অভাব ছিল। ছেলেদের জন্য যে-সকল বই আছে তাহা স্কুলে পড়বার বই; তাহাতে মেহের বা সৌন্দর্যের লেশমাত্র নাই; তাহাতে যে পরিমাণে উৎপীড়ন হয় সে পরিমাণে উপকার হয় না। ছেলেরা অত্যন্ত মূঢ় অবস্থাতেও কত আনন্দের সহিত ভাষা-শিক্ষা এবং কিরূপ কৌতুহলের সহিত বস্তুজ্ঞান লাভ করিতে থাকে তাহা কাহারও অগোচর নাই। প্রকৃতি যে নিয়মে যে প্ৰণালীতে ছেলেদিগকে শিক্ষা দিয়া থাকেন, মানুষ তাহার অনুসরণ না করিয়া নিজের পদ্ধতি প্রচার করিতে গিয়া শিশুদিগের শিক্ষা অনর্থক দুরূহ করিয়া তুলিয়াছে এবং তাঁহাদের আনন্দময় সুকুমার জীবনে একটা উৎকট উপদ্রব্য আনয়ন করিয়াছে। শিক্ষা দিতে হইলে শিশুদের হৃদয় আকর্ষণ করা বিশেষ আবশ্যক; তাহাদের স্বাভাবিক কল্পনাশক্তি এবং কৌতুহল প্রবৃত্তির চরিতার্থতা সাধন করিয়া তাহাদিগকে জ্ঞানের পথে অগ্রসর করিতে হইবে; বর্ণমালা প্রভৃতি চিহ্নগুলিকে ছবির দ্বারা সজীব এবং শিক্ষণীয় বিষয়গুলিকে ভালো ভালো চিত্রের দ্বারা মনের মধ্যে মুদ্রিত করিয়া দিতে হইবে। অর্থাৎ, একসঙ্গে তাঁহাদের ইন্দ্ৰিয়বোধ কল্পনাশক্তি এবং বুদ্ধিবৃত্তির অনুশীলন সাধন করিতে হইবে। সেইরূপ করা হয় না। বলিয়াই অধ্যাপনার জন্য শিশুদিগকে বিভীষিকার হস্তে সমর্পণ করিতে হয়। বালকদিগের অনেক বালাই আছে; সবচেয়ে প্রধান বালাই পাঠশালা। পাঠশালার শুষ্ক শিক্ষাকে সরস করিয়া তুলিবার প্রত্যাশা রাখি না। কারণ, অধিকাংশ লোকের ধারণা, যে, ঔষধ যতই কুস্বাদু, চিকিৎসার পক্ষে তাহা ততই উপযোগী, এবং কঠোর ও অপ্রিয় “এই স্থলে প্রসঙ্গক্রমে আমরা কেনোপনিষৎ হইতে একটি শ্লোক উদধূত করিতে ইচ্ছা করি। কেনেবিতং পততি প্ৰেবিতং মনঃ কেন প্ৰাণঃ প্ৰথমঃ প্ৰৈতিযুক্তঃ। কেনেফিতাং বাচমিমাং বদন্তি চক্ষুঃ শ্রোত্ৰং ক উ দেবো যুনিক্তি। ইহার তাৎপর্য এই-- মন কাহার দ্বারা প্রেরিত হইয়া পতিত হয়, অর্থাৎ নিজ বিষয়ের উপরে উপনীত হয়। প্ৰাণ কাহার দ্বারা প্ৰৈতিপ্ৰাপ্ত হইয়াছে, অর্থাৎ নিজ বিষয়ের অভিমুখে গতিলাভ করিয়াছে। কাহার দ্বারা প্রেরিত এই বাক্য লোকে উচ্চারণ করে এবং কোন দেবতাই বা চক্ষু শ্রোত্রকে স্ববিষয়ে যোজনা করেন। "প্রৈতি” শব্দটির প্রতি আমরা পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করিতে ইচ্ছা করি। বাংলা ভাষায় এই শব্দটির অভাব আছে। যেখানে বেগপ্রাপ্তি বুঝাইতে ইংরাজিতে impulse শব্দের ব্যবহার হয় আমাদের বিবেচনায় বাংলায় সেই স্থলে “প্রৈতি” শব্দের প্রয়োগ হইতে পারে।