পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী সুকঠিন, তারো চেয়ে সুকঠিন আজ সে কথা তোমারে বলা । সংক্ষেপে লে কব ; একবার শুনে মাত্র মন হতে তব । সে কাহিনী মুছে ফেলে – বালক কিশোর উত্তীয় তাহার নাম, ব্যর্থ প্রেমে মোর উন্মত্ত অধীর । সে আমার অনুনয়ে তব চুরি-অপবাদ নিজস্বন্ধে লয়ে দিয়েছে আপন প্রাণ ! এ জীবনে মম। সর্বাধিক পাপ মোর, ওগো সর্বোত্তম, করেছি তোমার লাগি এ মোর গৌরব ? ক্ষীণ চন্দ্র অস্ত গেল । আরণ্য নীরব শত শত বিহঙ্গের সুপ্তি বহি শিরে দাড়ায়ে রহিল স্তব্ধ। অতি ধীরে ধীরে রমণীর কটি হতে প্রিয়বাহুডোর শিথিল পড়িল খসে ; বিচ্ছেদ কঠোর নিঃশব্দে বসিল দোহামাঝে ; বাক্যহীন বজ্ৰসেন চেয়ে রহে আড়ষ্ট কঠিন পাষাণপুত্তলি ; মাথা রাখি তার পায়ে ছিন্নলতাসম শু্যামা পড়িল লুটায়ে আলিঙ্গনচু্যতা ; মসীকৃষ্ণ নদীনীরে তীরের তিমিরপুঞ্জ ঘনাইল ধীরে । সহসা যুবার জাঙ্ক সবলে বাধিয়া বাহুপাশে, আর্তনারী উঠিল কাদিয়া অশ্রহীরা শুষ্ককণ্ঠে, ক্ষমা করে নাথ, এ পাপের যাহা দণ্ড সে অভিসম্পাত হোক বিধাতার হাতে নিদারুণতর— । তোমা লাগি যা করেছি তুমি ক্ষমা করে ।