পাতা:রমেশ রচনাবলী (উপন্যাস).djvu/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাধবীকঙ্কণ স্থান নিদ্ধারিত করিতে মন্নিবরকে আদেশ করিলেন। অলপদিন পরেই যোধপুর-রাজ্ঞীর মাতা উদুয়পর হইতে যোধপরে গমন করিলেন। 置 নরেন্দ্রনাথ উদয়পরে কয়েক মাস বাস করিয়া পরম প্রীতি লাভ করিলেন। হেমের প্রতিমৃত্তি তাঁহার হৃদয়ে অনপনেয় অঙ্কে অঙ্কিত হইয়াছিল, হেমের চিন্তা তিরোহিত হইবার নহে। তথাপি সেই সন্দের উপত্যকায় বাসকালীন সে চিন্তাও কিঞ্চিৎ পরিমাণে লাঘব হইল । একে একে সমুদায় সন্দশন করিতে লাগিলেন। কখন একাকী, কখন দেওয়ানা তাতার বালককে সঙ্গে লইয়া নরেন্দ্র নানা পৰ্ব"ত উল্লঙ্ঘন করিতেন, হ্রদের এক অংশ হইতে অন্য অংশে, এক পব্বত হইতে অন্য পব্বতে, এক যুদ্ধক্ষেত্র হইতে অন্য যুদ্ধক্ষেত্রে বিচরণ করিতেন। কখন কখন প্রাতঃকাল হইতে দ্বিপ্রহর পয্যন্ত, দ্বিপ্রহর হইতে সন্ধ্যা পৰ্য্যন্ত পৰ্বত ও উপত্যকায় বিচরণ করিতেন। প্রাতঃকালে ক্রীড়াসক্ত রাজপত বালকগণ আঙ্গুলি নিন্দেশ পাবক সেই অপরিচিত ভ্রমণকারীকে দেখাইত, সায়ংকালে রাজপত মহিলাগণ কলসকক্ষে হ্রদ হইতে প্রত্যাবত্তনের সময় সেই বিদেশীকে চারণ বিবেচনায় প্রণাম করিয়া চলিয়া যাইত। দেওয়ানাও নিস্তন্ধে প্রভুর সঙ্গে সঙ্গে বিচরণ করিত, নিকটস্থ ব্যক্ষ হইতে ফল আহরণ করিয়া আনিয়া দিত, ও সায়ংকালে নৌকা আনিয়া আপনি দাঁড় ধরিয়া প্রভুকে উদয়পরে পুনরায় লইয়া যাইত। নিস্তন্ধ শান্ত হ্রদের উপর দিয়া ধীরে ধীরে নৌকা ভাসিয়া যাইত, সে শান্ত সায়ংকালীন আকাশ, নিস্তন্ধ পাবতিরাশি, ও নিমাল শব্দশান্য হ্রদ দেখিয়া নরেন্দ্রনাথের হৃদয় শাস্তিরসে পরিপণ্য হইত। কখনও বা দেওয়ানা সপ্তস্বরে গীত আরম্ভ করিত, সে বাল-কন্ঠ-বিনিঃসন্ত সুবিমল সবরে সেই নৈশহদ, পর্বতরাশি ও আকাশমণ্ডল ভাসিয়া যাইত। তাতার ভাষায় গীত, সে গান নরেন্দ্ৰ বুঝিতে পারিতেন না, তথাপি দুই একটী কথা শুনিয়া বোধ হইত যেন তাহা প্রেমের গান। অভাগা উন্মত্ত বালক ! তুই এই বয়সে কি প্রেমে উন্মত্ত হইয়াছিস ? না হইলে সে দেওয়ানা হইবে কেন, তাহার চক্ষ এরপে অস্বাভাবিক জ্যোতিঃতে দীপ্ত কেন, সে দেশ, গহ পরিত্যাগ করিয়া উন্মত্ত হইয়া দেশে দেশে বিচরণ করে কেন ? দেওয়ানা নরেন্দ্রনাথের উপযুক্ত ভৃত্য! রজনীযোগে চন্দ্রালোকে সেই হ্রদের নিম্মল জল বড় সন্দের শোভা পাইত। জলহিল্লোলে করিয়া যাইত। নরেন্দ্রনাথ নৌকার উপরে শয়ান হইয়া চারিদিকের সেই অনন্ত পর্বতরাশি দেখিতেন, অনন্ত আকাশে নিৰ্ম্মমল নীল আভা দেখিতেন, দুই একখানি দগ্ধফেননিভ শত্র মেঘ দেখিতেন। এই সমস্ত দেখিতেন আর বাল্যকালের কথা তাঁহার সমরণ হইত, হেমলতার কথা সমরণ হইত, অলক্ষিত অশ্রুবিন্দতে যোদ্ধার বদন সিক্ত হইয়া যাইত। །ཅེར་བུ། ཐ་མ་ཝ། ཝ་ཤ ཨ་ཅག་(ཐ་༦ sཚེ། ། ক্রমে আশ্বিন মাসে অম্বিকাপজার সময় সমাগত ! একবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ শারদীয়া পজা Go where glory waits thee. —Moore. শরৎকাল উপস্থিত। রাজপুতানায় এই সময়ে যুদ্ধ আরম্ভের সময়, সতরাং রাজস্থানে অশ্বিকার পাজার সহিত খড়োর পজা হইয়া থাকে। আশ্বিন মাসে উপযুপরি দশ দিন নরেন্দ্রনাথ যেরপে ঘটা ও সমারোহ দেখিলেন তাহা বর্ণনা করা যায় না। পর্বেপুরুষগণ যে সমস্ত অস্ত্র লইয়া যুদ্ধ জয় করিয়াছেন বা যুদ্ধে প্রাণ দিয়াছেন, যোদ্ধগণ এখন মহা উৎসাহে দেবীর মন্দিরে প্রতিদিন মহিষ ও মেষ বলি হইল, দশম দিবসে মহা সমারোহে দগোর পজা হইল, তাহার পর দিবসে মহারাণা সমস্ত যোদ্ধগণকে আহবান করিয়া রঙ্গস্থলে উপস্থিত হইলেন। সে দিন সমস্ত উদয়পন ষেন নতন শোভায় শোভিত হইয়াছে, বাজার, দোকান, পথ-ঘাটও পাপমাল্য ও বক্ষপত্রে পরিশোভিত হইয়াছে, স্বারে দ্বারে সন্দর ও সশোভিত তোরণ দৃষ্ট ১২১