পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
 
১৪৭
 

কল্যাণমাণিক্য ও
বাদসাহী ফৌজ

মহারাজের সম্মুখে পত্র পাঠ হইল। তাহাতে লেখা ছিল, ত্রিপুরেশ্বর যেন বাদশাহের নজরানা স্বরূপ সহস্র হস্তী পাঠাইয়া দেন। ত্রিপুর দরবার হইতে জানান হইল, ত্রিপুরেশ্বর বশ্যতা স্বীকারে অসমর্থ, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য জীবন বিসর্জ্জন দিবেন, তথাপি মাথা নীচু করিবেন না।

 বীরত্বপূর্ণ ত্রিপুরলিপি পাঠে মোগল শিবিরে রণচাঞ্চল্য জাগিয়া উঠিল। দুই পক্ষে ঘোর সংগ্রাম বাঁধিয়া গেল। মহারাজ কল্যাণমাণিক্য স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইলেন। কৈলাগড়ে ত্রিপুর সৈন্যের সমাবেশ হইল, কমলা সাগরের পশ্চিমে মোগল সেনাবাস রচিত হইল। জীবণ পণ করিয়া ত্রিপুর সেনা দুর্জ্জয় সাহসে যুঝিতে লাগিল। গোবিন্দনারায়ণ সৈন্যের অগ্রভাগ রক্ষা করিতে লাগিলেন আর মহারাজ স্বয়ং ত্রিপুর বাহিনীর মেরুদণ্ডস্বরূপ হইয়া রণক্ষেত্রে ত্রিপুর সৈন্য চালনা করিতে লাগিলেন। যেখানে উদ্যম ভঙ্গ লক্ষিত হইতেছিল, শাণিত কৃপাণহস্তে বর্ম্মপরিহিত মহারাজ সেইখানে অশ্বারোহণে যাইয়া যুদ্ধের গতি ফিরাইয়া দিতেছিলেন। এইভাবে এক অখণ্ড তেজে ত্রিপুরসৈন্যেরা যুঝিতে লাগিল। মোগলসৈন্যেরা তখন উপায়ান্তর না দেখিয়া যুদ্ধের শেষ অস্ত্র কামান প্রয়োগ করিল। বড় বড় কামানের গোলা আসিয়া কৈলাগড়ে পড়িতে লাগিল। গোবিন্দনারায়ণ মহারাজকে আনিয়া গোলা দেখাইলেন। তখন যুদ্ধের কৌশল পরিবর্ত্তন করিয়া শত্রুপক্ষকে বুঝান হইলে যেন ত্রিপুরসৈন্যেরা