পাতা:রাজমালা - ভূপেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্ত্তী.pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রাজমালা
১৯২
সমসের গাজি

হাতে রহিয়াছে, দুনিয়াতে কাহাকে ভয়? সমসেরের ইচ্ছা হইল এখন শক্তির পরীক্ষা হউক, তাই জমিদার নাছিরের নিকট তাঁহার কন্যা দৈয়া বিবির পাণিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠাইলেন। জমিদার ত অবাক! এ বলে কি? সামান্য তহশীলদার হইয়া এত বড় কথা! সমসেরকে শিক্ষা দিবার জন্য নাছির বিবাহের প্রস্তাবের প্রত্যুত্তর স্বরূপ একদল সৈন্য পাঠাইয়া দিলেন।

 সমসের অতটা প্রস্তুত ছিলেন না, তাই সহসা সৈন্যের আগমনে বেগতিক দেখিয়া দৈব অশ্বে চড়িয়া বেদরাবাদ পরগণায় কিছুকাল গা ঢাকা দিয়া রহিলেন, তাঁহার সঙ্গে সঙ্গে কনিষ্ঠ ভ্রাতা অমিত বলশালী ছাদু গাজিও ফিরিতে লাগিলেন। সেখানে সমসের কতকগুলি লোককে হাত করিয়া তাহাদিগকে সামরিক শিক্ষা দিয়া সহসা দক্ষিণ শিকে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, জমিদার নাছিরের সৈন্য তাঁহার গতিরোধ করিতে পারিল না। সমসের অতুল বিক্রমে বিপক্ষ সৈন্য বিধ্বস্ত করিয়া জমিদার ও তাঁহার পুত্রগণের বিনাশসাধন করিলেন; দক্ষিণ শিক সমসেরের হস্তে চলিয়া আসিল। তখন জমিদার নন্দিনীর পাণিগ্রহণে বাধা দিবার কেহ রহিল না। এক চক্ষের পলকে সমসের তহশীলদার হইতে দক্ষিণ শিকের জমিদার হইয়া গেলেন। ফকিরের কথা আশ্চর্য্য রূপে ফলিয়া গেল, এখন বাকী রহিল ত্রিপুরেশ্বরের সহিত শক্তি পরীক্ষা।