বৃহৎ প্রসাদের নিকট আসিয়া পড়িল এবং খিড়কির দুয়ার লক্ষ্য করিয়া চলিতে লাগিল।
শেষ বিপদ উত্তীর্ণ হইতে তখনও বাকি ছিল। সেই সময়ে বাড়ির সকলে নিদ্রিত। ভিতরে কেমন করিয়া প্রবেশ করিবে—ইহাই হইল সমস্যা। খিড়কির পাশের ঘরে করুণা শয়ন করিত, মাতঙ্গিনী তাহা জানিত। করুণা বাড়ির দাসী।
কয়েকবার দ্বারে করাঘাত করিতেই করুণার নিদ্রাভঙ্গ হইল। বিরক্তিকঠোর কণ্ঠে সে বলিয়া উঠিল, এতরাত্রে দুয়ার ঠেলে কে? মাতঙ্গিনী অধীর কণ্ঠে বলিল, করুণা, তাড়াতাড়ি দরজা খোল।
অসময়ে মধুর-নিদ্রা-ভঙ্গকারী আগন্তুকের প্রতি করুণার করুণা হইবার কথা নয়, সে কঠোর কণ্ঠে জবাব দিল, তুমি কে গো যে, এতরাত্রে তোমাকে দরজা খুলে দিতে হবে?
নিজের নাম বলিতে অনিচ্ছুক মাতঙ্গিনীর কণ্ঠস্বরে ব্যগ্রতা ফুটিয়া উঠিল, শিগগির এস, দেখলেই বুঝতে পারবে।
করুণা ধৈর্য্য হারাইল, চীৎকার করিয়া হাঁকিল, কে গা তুমি?
মাতঙ্গিনী জবাব দিল, আমি একজন সামান্য স্ত্রীলোক, চোর নই। দেখই না এসে!
করুণার সহজ বুদ্ধি তখন ফিরিয়া আসিতেছিল। তাহার বোধ হইল, চোরের গলা এমন মিঠা হয় না। আর কথা-কাটাকাটি না করিয়া সে দরজা খুলিয়া দিল।
মাতঙ্গিনীকে দেখিয়া করুণার বিস্ময়ের অবধি রহিল না। সে চীৎকার করিয়া উঠিল, ঠাকরুণ, তুমি?
মাতঙ্গিনী বলিল, আমি হেমের সঙ্গে দেখা করতে চাই, আমাকে তার কাছে নিয়ে চল।
করুণার বুদ্ধি যেন আবার লোপ পাইতেছিল। সে বিস্ময়ের মাত্রা