চড়াইয়া আবার প্রশ্ন করিল, এতরাত্রে তুমি এখানে? কি হয়েছে মা? তোমার কাপড় ভিজে—ব্যাপার কি?
অধীর মাতঙ্গিনী তাহার প্রশ্নের জবাব না দিয়া আদেশের ভঙ্গীতে বলিল, হেমের কাছে আমাকে নিয়ে চল।
করুণা বলিল, সে ঘুমুচ্ছে। তাকে জাগাচ্ছি, কিন্তু ততক্ষণে তুমি ভিজে কাপড়গুলো ছেড়ে ফেল, মা।
পার তো শিগগির একটা শাড়ি দাও, কিন্তু দেরি করো না।
করুণা হাতের কাছে যে শাড়ি পাইল তাহাই তাহাকে দিল। মাতঙ্গিনী চক্ষের নিমেষে বস্ত্র পরিবর্ত্তন করিয়া দোতলায় হেমাঙ্গিনীর কক্ষে যাইবার জন্য করুণার অনুসরণ করিল।
অষ্টম পরিচ্ছেদ
সতর্ক করা, না সশস্ত্র করা
মাতঙ্গিনী একটা খোলা বারান্দায় দাঁড়াইয়া ভগিনীকে জাগাইয়া তাহার কাছে লইয়া আসিবার জন্য করুণাকে আদেশ করিল। হেমাঙ্গিনী তখনও ঘুমায় নাই, মুহূর্ত্তকাল পরে সে উপস্থিত হইল। তাহার মুখে চোখে বিস্ময়ের চিহ্ন পরিস্ফুট, সাগ্রহ-সম্ভাষণে অসময়ে অপ্রত্যাশিত ভাবে মাতঙ্গিনীর আগমনের কারণ জিজ্ঞাসা করিল।
মাতঙ্গিনী বলিল, তোমাদের বাড়িতে আজ ডাকাতি হবে, আমি তোমাদের সাবধান করতে এসেছি।
বিমূঢ় হেমাঙ্গিনী অর্দ্ধস্ফুট কণ্ঠে প্রায় চীৎকার করিয়া উঠিল, ডাকাতি!
করুণাও ‘মাগো’ বলিয়া আর্ত্তনাদ করিয়া উঠিল। মাতঙ্গিনী বলিল, করুণা, চুপ কর। হেম, গোল করিস না। এখানে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবে না। তোর স্বামীকে সাবধান ক’রে তৈরি হতে বল্ গিয়ে।