বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রাজমোহনের স্ত্রী.djvu/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজমোহনের স্ত্রী
৮১

পূর্ব্বের প্রাঙ্গণ হইতেও সমৃদ্ধ। এখানে ধরিত্রীজাত শাকসব্জির উপর যে অকথিত অত্যাচার প্রত্যহই অবিরত করা হইতেছে তাহার নিদর্শন বর্ত্তমান; সলিলনিবাসী মীনজাতীয় জীবেদের উপর এই বিভাগের কর্ত্রীঠাকুরাণীরা যে অত্যাচার করেন, তাহারও চিহ্ন রহিয়াছে। অপ্রতিহত গৌরবে যুগযুগসঞ্চিত ঝুল এখানে রাজত্ব করিতেছে।

 চতুর্থ অর্থাৎ শেষ মহল রান্নাঘরের পিছনে অবস্থিত, কিন্তু এদিক হইতে ও-মহলে প্রবেশ করিবার সকল পথই অবরুদ্ধ। বাড়ির মেয়েদের মধ্যে যাহারা কদাচিৎ এই মহলে প্রবেশাধিকার পাইয়াছে, তাহাদের সংখ্যা খুব কম।

 পুরুষেরা এই মহলটিকে গুদাম-মহল বলিত। বাহির হইতে গুদামমহলে প্রবেশ করিবার একটিমাত্র দরজা—অত্যন্ত স্থূল, প্রায় নিরেট। এই মহলের তিন দিকে খাড়া উঁচু প্রাচীর, বাহিরের কেহ যাহাতে বাড়ির এই অংশে সহসা প্রবেশ করিতে না পারে, সেই জন্য এই প্রাচীরের উপরিভাগ বোতলের ভাঙা কাঁচ দিয়া দুর্গম করা হইয়াছে। চতুর্থ অর্থাৎ বাকি দিকে সারি সারি একতলা কতকগুলি ঘর। প্রত্যেক ঘরের দেওয়াল অসম্ভব রকম পুরু, দরজাগুলি ছোট, কিন্তু লোহার পাতমোড়া; জানালার বালাই কোনটিতেই নাই। সম্ভব অসম্ভব সকলপ্রকার দ্রব্য সুরক্ষিত রাখিবার জন্য এই গুদাম-ঘরগুলি ব্যবহৃত হয় সকলে এইরূপ জানিত। বাড়িটির এক দিকে সুপ্রশস্ত সুপারিবাগান, মাঝে মাঝে বকুলগাছ, চতুর্দ্দিক ইষ্টক-প্রাচীর দিয়া ঘেরা এবং ঠিক মধ্যস্থলে কানায় কানায় পরিপূর্ণ একটি পুকুর। এই অংশটিকে বাড়ির খিড়কি বলা হইত। রন্ধনশালার নিকট দিয়া এই অংশে আসিতে হয়, ইহার পরই আর একটি দরজা পার হইলেই গৃহসংলগ্ন উদ্যান।

 পাঠক, আসুন, আপনাকে সঙ্গে লইয়া আমরা এতক্ষণ যে সুবৃহৎ অট্টালিকার পরিচয় দিতেছিলাম, তাহারই দ্বিতীয় মহল অর্থাৎ,