পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ ૨૦ মহারাণী শরৎসুন্দরীর জীবন-চরিত। সমদৰ্শিতা, দয়া, বিনয়, অথবা ঔদ্ধত্য ও নিষ্ঠুরতা তাহাদিগকে কেহ শিখায় না। অতএব, উহাকেই প্রাক্তনসংস্কারজ অথবা সহজাত মূলপ্রকৃতি বলা যায়। পিতামাতার কর্তব্য, যে, শিশুদিগের সেই মূলপ্রকৃতির প্রতি দৃষ্ট রাখিয়া, সেই অক্ৰবাণ অবস্থা হইতেই তাহাদিগের চরিত্র গঠনের সদুপায় করেন । এই কালে তাহাদিগের যাবদীয় বৃত্তিই তরল ; যত্ন দ্বারা সেই তরল বৃত্তির বেগ প্রতিকূলে লইতে কিম্বা সতেজ করা যাইতে পারে। কিন্তু এই কার্য্যে বড়ই সাবধানতার অবশুক । শিশুদিগের হৃদৃত্তিসমূহ, তরল হইলেও, তাহার আবেগ বড়ই প্রবল। সেই আবেগকে হঠাৎ বলপূৰ্ব্বক রুদ্ধের চেষ্টা করিলে, মঙ্গল ন হইয়। বরং, অমঙ্গলের সম্ভাবনাই অধিক । উদ্ধত বালককে সৰ্ব্বদাই বাধ৷ দিলে, তাহার তরল হৃদয় ক্ষুব্ধ ও প্রতিভা নিস্তেজ হইয়া যায়।— মনুষ্যত্বের প্রধান গুণ ওজঃ নষ্ট হয় ; প্রত্যুত, বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে ক্রমশঃ চিত্তের স্বাধীনতা ও স্বাবলম্বন প্রভৃতি প্রধান বৃত্তি সকল, রুগ্ন হইতে থাকে। অবশেষে সে, ভগ্নহৃদয় হইয়। অকৰ্ম্মণ্য হইয়া যায়। তাদৃশ উদ্ধতপ্রকৃতির বালককে শাস্ত করিতে ইচ্ছা করিলে, তাহাকে ক্রমে বিনীতভাবাপন্ন কার্য্যে, অতি সরল উপায়ে লিপ্ত করা উচিত। আর এতদূর সন্তৰ্পণে করা আবশ্বক, বে, তাহার হৃদয়, যেন জানিতেও না পায় ; সে যেন ক্ষোভে ভগ্নচিত্ত না হয়। তাহাকে এরূপ খেলায় লুব্ধ করিতে হইবে, যে, হঠাৎ সে উদ্যমভঙ্গ, কি চিত্তাবেগ সম্বরণের কোনও যাতনা অনুভব করিতে না পারে –যেন খেলার নুতন নুতন চাতুৰ্য্যে, সে, আপন হইতেই মুগ্ধ হইয়া, নিত্য নবানুরাগে প্রফুল্লতা লাভ করে। অভিভাবকগণ, তাহার তরলচিত্তের সহিত মিশিয়। নানা কৌশলে উৎসাহবৃদ্ধি করিতে পারিলে, সহজেই তাহার ঔদ্ধত্য হ্রাস