পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘ෆී උ মহারাণী শরৎকুন্দরীর জীবন-চরিত। কথা” নামে প্রসিদ্ধ। শরৎসুন্দরী, পঞ্চম বংসর বয়সের সময়, তাহার অনেকগুলি কথা শিখিয়াছিলেন । তীব্র মেধা বলে এইরূপ নৈতিক উপখ্যান, এবং গার্হস্থ্য নীতির স্ত্রী পরম্পরা প্রচলিত বিস্তর কবিতা, মুখস্থ করিয়াছিলেন । তদ্ভিন্ন বালিকার, ভবিষ্যত চরিত্র গঠনের, আর একটা সুযোগ, ঘটিয়া ছিল। র্তাহার পিতার বিস্তৃত অতিথিশালা, র্তাহার দুশিক্ষার সাহায্য করিয়াছিল । * তিনি, সৰ্ব্বদাই অতিথিদিগকে স্বচক্ষে ভোজ্য বিতরণ দেখিতেন। ইহাদিগের মধ্যে, অন্ধ, বিকলাঙ্গ, অসমর্থ, দীন দুঃখীর অভাব ছিলন। তাহাদিগের ছদ্দশায় বালিকার অন্তঃকরণ, বড়ই ব্যথিত হইত। বহুদেশ পর্য্যটনে, নানা জাতির সংঘর্ষে, যে যে বিষয়ে অভিজ্ঞতা হয়, একটা প্রকাণ্ড অতিথি শালায় সেরূপ না হইলেও, লোক চরিত্র বুঝিবার অনেক সুবিধা আছে। তাহাতে নানা দেশীয়, নানা প্রকৃতির লোক দেখা যায়। শরৎসুন্দরী, , সেই অতিথিশালা প্রবাসী, নানা শ্রেণীর লোকের নিকট, নানা কথা শুনিতেন ; মনুষ্য জীবনের চরম বিভীষিকা দেখিতেন ; দরিদ্রের ও ব্যাপিগ্রস্তের দুঃখ, এবং দুঃখ সহিষ্ণুতা দেখিয়া, বালিকা, এক এক সময় আত্মহারা হইতেন। আপনার সাধ্যমত, তাহাদের দুঃখ মোচনের চেষ্টা করিতেন । ফলতঃ সংসারীর এই সকল দুৰ্গতি দেখিয়া, তাহার এই গল্পের সমষ্টি, প্রায় ২৫।৩০ট হইবেক । তন্মধ্যে অস্তুত: ১৭টা উপাখ্যান আলোচন৷ অবষ্ঠা কৰ্ত্তৰ । কোনও গুরুতর প্রতিবন্ধক উপস্থিত হইলেও, তাহার) নিতান্ত পক্ষে তিনটী কথা না শুনিয়া জল গ্রহণ করা, নিতান্ত অমঙ্গল কর বলিয়া বিশ্বাস করেন ।

  • ভৈরবনাথ, একজন প্রসিদ্ধ আতিথেয় ছিলেন । পুঠিয়া রাজবাটীতেও অতিথি সেবা আছে । ভৈরবনাথ, স্বয়ং বিশেষ সমাদর করিতেন বলিয়া, তাহার বাটীতেই বহু অতিথির সমাগম হইত। আতিথ্যে র্তাহার কালাকাল, পাত্র পাত্র বিবেচনা ছিল না । তিনি, সাধারণ ভিক্ষুক হইতে, যাত্র গানের দল, সাপুড়িয়া, বাজীকর এবং রাজবাটীতে কৰ্ম্ম প্রার্থীদিগকে পর্যন্ত আহার দিতেন। সকল সম্প্রদায়ের লোকেরই, নির্বিশেষে অtশ্রয় এবং আহার যোগাইতেন । ঐ সকল ব্যক্তি, দুই চারি দিন দুরাস্তাং, দীর্ঘকাল থাকলেও ভৈরবনাথ কুষ্ঠিত হইতেন না ।