পাতা:রানী শরৎ সুন্দরীর জীবন-চরিত - গিরীশচন্দ্র লাহিড়ী.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহারাণী শরৎকুন্দরীর জীবন-চরিত। Hථ করদিগের গুদামরূপ কারাগারে কৃষকদিগের আর্তনাদ বন্ধ হইল — প্রজার, যে পরোপকারী যোগেন্দ্রনারায়ণের আশ্রয় লইয়া প্রাণ পণ চেষ্টা করিয়াছিল, তাহ সফল হইল । * যোগেন্দ্রনারায়ণ, ১২৬৭ বঙ্গাৰো সম্পত্তির ভার গ্রহণ অন্তে, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ পর্য্যন্ত, নীল বিদ্রোহে আত্মসমর্পণ করিয়া বহুকষ্টে যেমন কৃতকাৰ্য্য হইলেন ; সেইরূপ দিনে দিনে তিনি আপনিও মৃত্যুপথে অগ্রসর হইতে লাগিলেন। শরীর, নানা রোগে আক্রান্ত হইলেও অভ্যাস বশে প্রাণঘাতিনী সুরাকে পরিত্যাগ করিতে পারিলেন না । কাৰ্য্যক্ষেত্রে তাহার অক্লাস্ত পরিশ্রম এবং দুৰ্দ্দম উৎসাহ দেখিয়া তাহার আত্মীয়গণ ও প্রথমে তাহা বুঝিয়াছিলেন না। র্তাহার অসাধারণ দৃঢ়তা, অবিচলিত কৰ্ত্তব্য নিষ্ঠ, নিভাক স্বদেশ প্রেমিকতা, এবং প্রকৃত আত্মত্যাগ সমন্বিত মহত্বজনক প্রজা বাৎসল্য, এই হতভাগ্য নিজীব দেশে অনেকেরই শিক্ষণীয়। তিনি, প্রস্তাবিত শক্তিবলে নীলকরদিগের "নিজ জোত” নামক বিস্তর ভূমি আপনার করায়ত্ব করিয়৷ পূৰ্ব্বাধিকারী প্রজাকে দিয়াছিলেন। র্তাহার উদ্যমশীলতায় সাটার উপদ্রবও, অনেক পরিমাণে কমিয়াছিল ; ফলতঃ মৃত্যু যদি πüμμ η

  • প্রস্তাবিত বিদ্রোহের মধ্যে যোগেন্দ্রনারায়ণের প্রাণপণ উৎসাহে উচ্ছৃঙ্খল প্রজার কতিপয় কুঠী লুণ্ঠন করিয়াছিল। নীলের বীজে পুঠিয়ার স্যামসাগর নামক দীঘির জল এরূপ বিবর্ণ ও দুর্গন্ধ হইয়াছিল, যে, তাহার নিকট-দিয়া গমনাগমন অসাধ্য হইয়াছিল । নীলকরগণ, প্রাণ ভয়ে মিঃ টেলারের আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন । শেষে তিনি, মহাভীত হইয়। গবর্ণমেণ্টে লিখিয়া একদল অস্ত্রধারী সৈন্য আনাইয়াছিলেন । প্রত্যেক বিপদাপন্ন কুঠী রক্ষার জন্ত সেই সকল সৈন্ত নিযুক্ত হইল। মি: টেলারের নিকট উভয় পক্ষ হইতে শত শত মোকদম উপস্থিত হইতে লাগিল। তখন তাহাকে প্রায় চারি মাস কাল ঘটন স্থানসকলে ভ্রমণ করিয়া বিচার নিম্পত্তি করিতে হইয়

ছিল । বিচারে যে, দলে দলে প্রজা কারাগারে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল, তাহ আর বলিবার প্রয়োজন রাখে না ।