পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ s७१ ] যোগ তপের কথা উপহাস মাত্র । অতএব ব্রাহ্মণ যদ্যপি সাধনের একমাত্র অধিকারী হন, তাহা হইলে সেরূপ ব্রাহ্মণের অভাব । এক্ষণে সাধনের অধিকারী কাহার হইবেন ? পূৰ্ব্বকালে ব্রাহ্মণের বিদ্যাধ্যয়ন কাৰ্য্যে ঘটত্রিংশতবৎসর ব্রহ্মচৰ্য্যায় অতিবাহিত করিয়া কেহ দার পরিগ্রহপূর্বক সংসারাশ্রমে প্রবেশ করিতেন এবং কেহ সাধন কার্য্যে জীবন উৎসর্গ করিতেন । র্যাহার। ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রম হইতে যোগী হইতে ইচ্ছা করিতেন, তাহার। আর দার পরিগ্রহ করিতেন না । যোগীরা জিতেন্দ্রিয় হইতেন । সংসারী হওয়া বা না হওয়া ব্রাহ্মণের ইচ্ছাধীন ছিল । পিতা মাতা জোর করিয়া উদ্বাহগৃঙ্খলে পদবন্ধন করিয়া ফেলিয়া রাখিতেন না। ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদিগের যদিও ব্রহ্মচর্য্যাবস্থায় অধ্যয়নাদি করিবার অধিকার ছিল এবং ইচ্ছাক্রমে যোগাবলম্বন করিতে পারিতেন, কিন্তু কাৰ্য্যবিশেষ কৰ্ত্তব্য বলিয়া স্থির নিশ্চয় থাকায় অনেক সময়ে তাহাই করিতে হই ত । এই নিমিত্ত ব্রাহ্মণের সাধন কার্য্যে সম্পূর্ণ অধিকারী ছিলেন। কিন্তু বৰ্ত্তমানকালে সে অবস্থার সম্যকৃরূপে পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে ঈশ্বর সাধন কার্য্যে অধিকারী কাহারা ? এ প্রস্তাব সম্বন্ধে শাস্ত্রাদির মতামত লইয়া আন্দোলন করিবার আমাদের শক্তি নাই, তাহ পণ্ডিতদিগের অধিকারসস্তৃত কথা। রামকৃষ্ণদেব যে প্রকার অভিপ্রায় প্রকাশ করিয়াছেন, তাহাই অদ্যকার আলোচ্য বিষয় । রামকৃষ্ণদেব বলিয়াছেন যে, কামিনীকাঞ্চনের লেশমাত্র সম্বন্ধ থাকিতে ঈশ্বর সাধনের অধিকারী হওয়া যায় না । তাহার মতে জাতি, বর্ণ বা ব্যক্তিবিশেষে যে নির্দিষ্ট অধিকারী, তাহা নহে। যে জাতিই হউক, যে বর্ণই হউক, কামিনীকাঞ্চন ভাব হইতে সম্পূর্ণরূপে অব্যাহতি লাভ করিতে পারিলেই ঈশ্বর সাধনের একমাত্র অধিকারী হইবেন ।