পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এক্ষণে জিজ্ঞাস্ত হইতেছে যে, কামিনীকাঞ্চন ত্যাগ করিতে পারিলে ঈশ্বর সাধনার অধিকারী হওয়া যায়। রামকৃষ্ণের কথার ভাবে তাহ। বুঝায় । সাধনায় ব্ৰতী হইতে হইলে হীনবীৰ্য্য হইলে কখন ধ্যান ধারণ এবং সমাধিলাভ হইতে পারে না। সাধনার উদ্দেশ্যই সমাধিলাভ করা । এই উদেখা যাহাতে সিদ্ধ হয়, সাধকদিগের তাহাই করা কৰ্ত্তব্য, সুতরাং কামিনীকাঞ্চন সম্বন্ধ একেবারেই থাকিবে না। শ্বাসকাশ ব্যাধিগ্রস্থ কি কখন প্রাণায়াম করিবার যোগ্য, না কেহ তাহাকে সাধকশ্রেণীতে গ্রহণ করিতে পারেন ? পুত্র পৌত্ৰাদি পরিবেষ্টিত ব্যক্তি কি কখন ধ্যান করির দুই দণ্ড চিত্তস্থির করিতে সমর্থ হন ? সমাধির কথাই নাই । কামিনীকাঞ্চন সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করিয়া কেহ অদ্যাপি ঈশ্বর সাধনের অধিকার লাভ করিতে পারেন নাই । এই কথা শ্রবণ মাত্রেই অনেকে বিস্ময়াপন্ন হইবেন । অনেকে আমাকে পাগল মনে করিয়! আমার মুখের দিকে অবাক হইয়। চাহিয়া থাকিবেন । সংসার ত্যাগ করিয়া চিরকাল লোকে সাধক হইয়| আসিতেছেন, সংসারাশ্রমের পর বানপ্রস্থাশ্রমাদির কথা শাস্ত্রে দিব্যাক্ষরে লিখিত রহিয়াছে, বিশেষতঃ আমাদের দেশে পাইকপাড়া নিবাসী লালাবাবু সন্ন্যাসাশ্রম অবলম্বন পূর্বক জীবনের শেষ ভাগ অতিবাহিত করিয়াছিলেন এবং উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে এ প্রকার অগণন সাধক দেখিতে পাওয়া যায়, তখন আমি রামকষ্ণদেবের যে উপদেশ প্রচার করিতেছি, তাহার আর স্থান না হবে কোথায় ? কথা সত্যবটে, সংসার ত্যাগ পূৰ্ব্বক অনেকে সাধকশ্রেণীতে সন্নিবিষ্ট হইয়াছেন, সে কথা ঐতিহাসিক ঘটনা, সুতরাং তাহার বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হত্তয়া যায় না ; তবে রামকৃষ্ণদেব এপ্রকার অন্যায় ব্যবস্থা করিলেন কেন ?