পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৯২ ] প্রকটিত হইয়া থাকেন। যতদিন সঙ্কল্প থাকে, ততদিন জৈবলীলায় অভিভূত হইয়া থাকেন। জীব বলিলে সঙ্কল্পযুক্ত পরমাত্মাকেই বুঝায়। এই অবস্থায় পরমাত্মার সঙ্কল্প প্রবল থাকে, তন্নিমিত্ত জীবের ভিতরে যে পরমাত্মা বসতি করেন, তাহাকে জীবাত্মা কহা যায়। ঠাকুর বলিতেন, যখন কেহ গান করে তাহাকে তখন গায়ক কহে, সেই ব্যক্তি হাকিমের সম্মুখে উকীল, সেই ব্যক্তি মদ খাইলে মাতাল, আবার সেই ব্যক্তি ভগবৎভক্ত হইলে সাধু নামে উল্লিখিত হয়। যেমন কাৰ্য্যবিভিন্নতায় উপাধি লাভ হয়, পরমাত্মাও উপাধিগ্রস্ত হইলে উপাধিহিসাবে জীবাত্মা বলিয়া পরীকীৰ্ত্তিত হইয়া থাকেন। কল যেমন মনুষ্যসঙ্কল্পিত, দেহ-কলও তেমনি পরমাত্মা কর্তৃক কল্পিত হইয়। থাকে । কল যেমন মনুষ্যের দ্বারা চলে এবং মনুষ্যই তাহাই চালাইতে জানে, দেহ-কল তেমনি পরমাত্মার দ্বারা চলে এবং তিনিই চালাইতে জানেন । মনুষ্যের যতদিন কল চালাইবার সাধ থাকে, ততদিন সে উহা চালাইতে পারে এবং কল জীর্ণ হইয়া অচল হইলে নুতন কল নিৰ্ম্মাণ করিতে পারে, পরমাত্মাও ইচ্ছামত দেহ-কল চালাইতে পারেন এবং যতদিন সাধ থাকে, পুরাতন কল পরিবর্তন করিয়া নুতন দেহরূপ কল লইয়৷ কাৰ্য্য করিয়া থাকেন। সাধ অর্থাৎ সঙ্কল্প ফুরাইয়া যাইলে জৈবখেলার শেষ হইয়া আইসে। কলের উপমার দ্বারা আত্মা বুঝা গেল বটে, কিন্তু ইহা হইতে নানাবিধ প্রশ্ন উঠিতে পারে। যথা, পল্পমাত্মা বা ঈশ্বর স্বয়ং কি জীব জন্তু হইয়া থাকেন ? অথবা তাহারা তাহার স্বজিত বস্তু ? রামকৃষ্ণদেব এই প্রশ্নের উত্তরে বলিয়াছেন যে, ইহা হিন্দুমত বটে। জ্ঞানমতে সকলই “আমি এবং আমার”, লীলা বা ভক্তি মতে “তুমি এবং তোমার”, অর্থাৎ হে ঈশ্বর এই স্বষ্টির কৰ্ত্ত তুমি এবং ইহা তোমারই