পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ১৯৫ ] বঁচি সুপারি বা নারিকেল কৰ্ত্তন করিয়া সুপারি এবং নারিকেল স্বতন্ত্রভাবে প্রাপ্ত হওয়া যায় না, উহার খোসার সহিত জড়িত থাকে । যাহাদের দর্শন এবং বিচার এই স্থানেই স্থগিত হইয়া যায়, সুপারি এবং নারিকেল খোসা হইতে বিমুক্ত হইতে পারে না, এই জ্ঞান তাহাদের চিরকাল বদ্ধমূল হইয়া থাকিবে। সকল বিষয়েরই কাৰ্য্য চাই । বিনা কার্য্যে কেহ কস্মিনকালে কোন ফল প্রাপ্ত হইতে পারেন না। আত্মা বুঝিতে হইলে তাহার সাধনার প্রয়োজন । যদ্যপি কেহ আত্মার দর্শন করিবার সাধনা করেন, তিনি নিশ্চয় সময়ে আত্মার সাক্ষাৎ পাইয়া থাকেন । যেমন সুপারি বা নারিকেল রসবিহীন না হইলে খোসা হইতে বিমুক্ত হইতে পারে না, রসবিহীন হইতে হইলে উত্তাপের সহায়তাই একমাত্র উপায়, তেমনি কামিনীকাঞ্চন-রসের দ্বারা আত্মা দেহরূপ খোসার সহিত জড়ীভূতাবস্থায় অবস্থিতি করে, জ্ঞানাগ্নির প্রখর উত্তাপ শরীরে প্রবিষ্ট হইলে কামিনীকাঞ্চন-রস ক্রমে ক্রমে শুষ্কপ্রায় হইয়া আইসে। যখন জীবাত্মা কামিনীকাঞ্চন-রস হইতে এককালে সম্বন্ধবিহীন হন, তখন আর র্তাহাকে দেহে জড়িত থাকিতে দেখা যায় না। তিনি সেই সময়ে স্বতন্ত্র হইয়া পড়েন । কামিনীকাঞ্চনই জীবাত্মার প্রধান সঙ্কল্প । এই সঙ্কল্পেই তিনি ক্রমান্বয়ে বিস্তীর্ণ হইয়া থাকেন। যত কামিনীকাঞ্চন সঙ্কল্প কমিয়া আইসে, তিনি ততই স্ব স্বরূপের দিকে আকৃষ্ট হইতে থাকেন, যে মুহূৰ্ত্তে সঙ্কল্পবিবর্জিত হইয় পড়েন, সেই মুহূর্তে তিনি পরমাত্মার সহিত একাকার হইয়া যান। রামকৃষ্ণদেব বলিতেন যে, চুম্বকের সন্নিধানে লৌহ আসিবামাত্র উহা আকৃষ্ট হইয়া থাকে, কিন্তু লৌহের উপরে কর্দমাবৃত করিয়া চুম্বকের সহিত সংস্পর্শ করিলেও আকর্ষণ করিবার কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। এই দৃষ্টাস্তে কর্দম